দেশে শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী অপরাধে জড়িয়ে পড়া শিশু ও কিশোরদের সংশোধন, উন্নয়ন ও স্বাভাবিক জীবনে একীভূত করার লক্ষ্যে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র পরিচারিত হচ্ছে দু’টি। যার একটি যশোর শহরতলী পুলেরহাটে। অপরটি গাজীপুরের টঙ্গিতে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত কিশোর কেন্দ্রে শিশু ও কিশোরদের কেইস ওয়ার্ক, গাইডেন্স, কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে মানসিকতার উন্নয়ন, ডাইভারশন ইত্যাদি স্বীকৃত পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণ, ভরণপোষন, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন করে কর্মক্ষম ও উৎপাদনশীল নাগরিক হিসেবে সমাজে পুনর্বাসিত/আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে এর পুরোটা বাস্তবায়ন কখনোই হয় না বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের সরকারি দায়িত্বশীলদের অনেকেই দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে থাকেন। দায়িত্বহীনতা ছাড়াও রয়েছে কেন্দ্রটিতে অনিয়ম, অব্যবস্থা ও দুর্নীতির অভিযোগ। চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি শিশু ও কিশোরদের ঠিকমতো খাবার না দেওয়া ও নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে।
সঙ্গত কারণেই পর্যবেক্ষক মহলে প্রশ্ন উঠেছে এটি সংশোধন কেন্দ্র না নির্যাতন কেন্দ্র। একের পর এক ঘটনায় সেই প্রশ্ন বদ্ধমূল হয়েছে। শুধু বৃহস্পতিবার ৩ কিশোর নিহত ও ১৫ কিশোর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা নয়। এর আগেও ২০১১ সালের ২৯ আগস্ট আকাশ (১২) নামে এক শিশুকে টিনের টুকরো দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ২০১৯ সালের ৩০ জুন নূর ইসলাম (১৫) নামে এক শিশু আত্মহত্যা করে। ২০১৪ সালে ৫ মে কেন্দ্রে বন্দিদের সঙ্গে আনসার বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় নির্যাতিত কিশোররা কেন্দ্রে ভাঙচুর ও ভাঙা কাচ দিয়ে শরীর কেটে প্রতিবাদ জানায়।
সব ঘটনারই তদন্ত কমিটি হয়। পরে তা ধামাচাপা পড়ে যায় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত কর্মকর্তারা থাকেন বহাল তবিয়তে। যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঈশানসহ কয়েকজন কিশোর ও নিহত রাব্বির মাতা পারভীন বেগমসহ অনেক অভিভাবক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, ওটি কী সংশোধন কেন্দ্র না নির্যাতন কেন্দ্র। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন