বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পলিটেকনিক শিক্ষা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

দেশের পলিটেকনিক শিক্ষা ধ্বংসে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা। তারা বলেন, প্রতিবছর টেকনিক্যাল সাপোর্টের জন্য দেশের বাইরে ৬ বিলিয়ন ডলার চলে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের পলিটেকনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ইঞ্জিনিয়াররা নিজেদের যোগ্যতায় জায়গা করে নিচ্ছে। ধীরে ধীরে বাইরে থেকে লোক আনা কমে যাচ্ছে। একারণে এখন পলিটেকনিক শিক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই শিক্ষা ধবংস করতে পারলে আশপাশের দেশ থেকে লোক আনতে হবে, তারা উপকৃত হবে। শুক্রবার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইডিইবি) উদ্যোগে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব ও বর্তমান সংকট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় জানানো হয়, সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে যেকোনো বয়সের শিক্ষার্থীদের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির নীতিমালার সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হলে সেপ্টেম্বর থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-শিক্ষকরা দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনে নামবে।
আইইডিবির মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুর রহমান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষিত নতুন ভর্তি নীতিমালা অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য ও বর্তমানে সফলভাবে পরিচালিত কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের পায়তারা। ২০১৯ সালের আগের নীতিমালা অনুসারে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে। তা না হলে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন ছাত্র-শিক্ষকরা।
তিনি বলেন, পিতৃতুল্য কিংবা বড় ভাইয়ের বয়সী শিক্ষার্থীদের সাথে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ফারাকের কারণে শ্রেণিকক্ষের ভারসাম্য নষ্ট হবে, সামাজিক ও প্রশাসনিক সমস্যার সৃষ্টি হবে। শিক্ষকদের পক্ষে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ রক্ষা সম্ভব হবে না। ফলে নিয়মিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ শিক্ষার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। শিক্ষার্থী বৃদ্ধির পরিবর্তে হ্রাস পাবে। সমাজে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা সম্পর্কে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হবে।
শামসুর রহমান বলেন, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত এনএসডিএ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এনটিভিকিউএফ- এর আওতায় লেভেল ১ থেকে ৬ পর্যন্ত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে চাকরি ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের সমতুল্য হওয়ার এবং যুব উন্নয়ন অধিদফতর, বিএমইটিসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়, এনজিওর মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের ব্যবস্থা আছে। এসব প্রতিষ্ঠানে তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলে দেশ-বিদেশের চাকরির জন্য ও উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যবস্থা করা যুক্তিযুক্ত। তারপরও যদি বয়স্কদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে হয়, বিকল্প হিসেবে ১১টি সরকারি পলিটেকনিকে সান্ধ্যকালীন কোর্সে তাদেরকে ভর্তি করে ক্লাস চালানো যেতে পারে।
আইডিইবির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম এ হামিদ বলেন, এমনিতেই কারিগরি শিক্ষায় শঙ্কট বিদ্যমান। ল্যাব, ওয়ার্কসপ ও ক্লাসরুমের সমস্যা, পলিটেকনিক ও টিএসসিতে ছাত্রছাত্রীদের থেকে অন্যায়ভাবে প্রতিমাসে টাকা সংগ্রহ করে পার্টটাইম অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে ক্লান নিচ্ছেন। ২০২০ সালের মধ্যে মাধ্যমিকে প্রাক-বৃত্তিমূলক শিক্ষা কোর্স চালুর নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। এরই মধ্যে ভর্তির নতুন নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। এবিষয়ে তিনি বলেন, জিপিএ কমিয়ে এবং যে কোন বয়সে ভর্তির সুযোগ রাখায় কারিগরি শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বয়স্ক এবং বিদেশফেরতদের কারিগরি শিক্ষার সুযোগ দিতে হলে পৃথক প্রতিষ্ঠান, সান্ধ্যকালীন কোর্স কিংবা ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন আইইডিবি সভাপতি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন