অনাবৃষ্টি খরতাপের ‘অচেনা’ শ্রাবণের বিদায়। এবারের শ্রাবণ মাসে ঘনঘোর মেঘ-বাদলের অঝোর ধারা ছিল খুবই কম জায়গায়। বরং প্রবল বর্ষণের বদলে সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপদাহে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। সফেদ প্রকৃতির শোভায় ভরপুর শরৎ ঋতুর ভাদ্র মাস শুরু আজ। আকাশজুড়ে সাদা মেঘের ভেলা, নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়ের তীরে সফেদ কাশফুল বাতাসে দোলা দেবে। আকৃষ্ট করবে চপল কিশোর-কিশোরীদের।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্ষার মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা জোরদার অবস্থায় বিরাজ করছে। তাছাড়া উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে রয়েছে একটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ। এর ফলে চলতি সপ্তাহে দেশের প্রায় সর্বত্র হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৌসুমী বায়ুর সক্রিয় প্রভাবে দেশের প্রায় সর্বত্র বর্ষণ হয়েছে। কোথাও হালকা থেকে মাঝারি, কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। চট্টগ্রাম বিভাগে হালকা, মাঝারি, ভারী ও অতিভারী বর্ষণ হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত কক্সবাজারে ১০৭ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় মাত্র ৩ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে। প্রায় দেশজুড়ে কমবেশি বৃষ্টিপাতের ফলে তাপদাহ কেটে গেছে। গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সিলেট ও বদলগাছীতে ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩০.৬ এবং সর্বনিম্ন ২৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. আফতাব উদ্দিন জানান, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উড়িষ্যা-গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ উপক‚লীয় এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় অবস্থান করছে।
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় রয়েছে। এর ফলে বায়ুচাপে পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এ কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে চট্টগ্রাম থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণের উপক‚লীয় জেলাসমূহ ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে দুই ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপক‚লের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন