রাশিয়ার পরে বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসাবে নিজেদের তৈরি একটি করোনা ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ব অনুমোদন দিয়েছে চীন। এটাই চীনা সরকারের অনুমোদন পাওয়া প্রথম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন। রাশিয়ায় বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ প্রস্তুত হয়ে গেছে। আগস্টের শেষ দিকেই তা বাজারে আসছে বলে জানা গেছে।
চীনের ভ্যাকসিনটি নিয়ে কাজ করেছে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চেন ওয়ের নেতৃত্বাধীন একটি টিম। প্রথম দু’টি ধাপে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর এ ভ্যাকসিনের সফলতার পরই চীন সরকার এ ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ব অনুমোদন দিল। চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের (সিজিটিএন) এক টুইট বার্তায় দেশটির প্রথম ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ব অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দু’টি ধাপেই পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এ ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্যের বরাত দিয়ে সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, করোনার এ ভ্যাকসিনটি নিরাপদ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে কার্যকর। ভ্যাকসিনটি ৩২০ জন স্বেচ্ছাসেবীর দেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। প্রথম ধাপের ট্রায়ালে ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সী ৯৬ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে ২২৪ জন স্বেচ্ছাসেবক ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফলে ভ্যাকসিনটি কার্যকরভাবে স্বেচ্ছাসেবীদের দেহে নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডি তৈরি এবং রোগ প্রতিরোধে সক্ষমতা দেখিয়েছে।
এদিকে, বিশ্বের মধ্যে প্রথম করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেছে রাশিয়া। দেশটি জানিয়েছে, তাদের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ ইতোমধ্যেই প্রস্তুত হয়ে গেছে। আগস্টের শেষের দিকেই এ ভ্যাকসিন সাধারণের ব্যবহারের জন্য বাজারে ছাড়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
গত ১১ আগস্ট করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুত বলে জানায় মস্কোর গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউট। সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য এ ভ্যাকসিনই প্রথম অনুমোদন পেয়েছে। এর আগে বলা হয়েছিল, রাশিয়ার গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি এ ভ্যাকসিন বাজারে আসতে আসতে সেপ্টেম্বর মাস হয়ে যাবে এবং গণহারে এ ভ্যাকসিন প্রদানের কাজ শুরু হবে অক্টোবর মাসে। তবে সেই সময় এগিয়ে এবার আগস্টের শেষ বলা হয়েছে। রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে গোটা বিশ্বের বৈজ্ঞানিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে, যাবতীয় সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে রাশিয়া এর আগেই জানায় যে, ইবোলা ও মার্সের মতো ভয়ঙ্কর ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে তারা কোভিডের ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’ বানাতে সক্ষম হয়েছে।
শনিবার এ কথা জানিয়েছেন মস্কোর গামালেয়া গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান আলেকজান্ডার গিন্সবুর্গ। তিনি বলেন, ‘তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবককে প্রতিষেধকের দু’টি করে ইঞ্জেকশন দেয়া হবে। তবে সে জন্য কাউকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে না। তারা বাড়ি থেকেই স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করতে পারবেন।’ রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো জানান, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ বাজারে ছাড়া হবে। পশ্চিমা বিশ্ব রুশ ভ্যাকসিনকে নিরাপদ নয় বলে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তা-ও নাকচ করে দেন মুরাশকো। তিনি বলেন, প্রতিদ্ব›দ্বীরাই এমন কথা বলছে। একইসঙ্গে তিনি জানান, এ ভ্যাকসিন গ্রহণকারীরা কোনও সমস্যায় পড়ছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণে বিশেষ একটি অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। সূত্র : ব্যাংকক পোস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন