শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আসামে জঙ্গি হামলায় ১৫ জন নিহত

প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : আসামের কোকরাঝাড়ে এক জঙ্গি হামলায় অন্তত ১৫ জন মারা গেছেন। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন একজন জঙ্গিও। ২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের সংখ্যা সঙ্কটজনক। ২-৩ জঙ্গি হামলার পরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে, যাদের ধরার জন্য পুলিশ, আধাসামরিক বাহিনী আর সেনা সদস্যরা যৌথ অভিযান চালাচ্ছেন। বিশেষ করে নজর দেওয়া হচ্ছে কোকরাঝাড় আর ধুবরী জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। বোড়োল্যান্ড এলাকার অতিরিক্ত পুলিশ মহানির্দেশক এল আর বিশ্নোই বিবিসি বাংলাকে বলেছেন নিহত জঙ্গি ন্যাশনাল ডেমক্র্যাটিক ফ্রন্ট অব বোড়োল্যান্ড বা এনডিএফবি গোষ্ঠীর সদস্য। এটি দীর্ঘদিন ধরেই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলি বলছে, গতকাল দুপুরে বোড়োল্যান্ড স্বশাসিত এলাকার প্রধান শহর কোকরাঝাড় থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে বালাজান তিনিয়ালী বাজারে ওই হামলা চালানো হয়। দ্বিসাপ্তাহিক ওই হাটে সে সময়ে প্রচুর মানুষ হাজির ছিলেন। সম্ভবত একটি অটোরিকশায় চেপে হামলাকারীরা সেখানে পৌঁছায়। প্রথমেই একটি গ্রেনেড ছোঁড়ে তারা। ওই বিস্ফোরণে আতঙ্কিত মানুষজন যখন ছুটে পালাতে যান, তখনই বৃষ্টির মতো গুলি ছুঁড়তে থাকে জঙ্গিরা। কয়েকটি দোকানে আগুন ধরে যায় গ্রেনেড বিস্ফোরণে।
বোড়োল্যান্ড এলাকা উপদ্রুত অঞ্চল বলে সব সময়েই কড়া পুলিশ-আধাসেনাদের পাহারা থাকে।
বিস্ফোরণ আর গুলির আওয়াজ শুনেই নিরাপত্তাবাহিনীও পাল্টা গুলি চালাতে থাকে। একজন মারা গেলেও বাকিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। অন্য দিকে বাজারে আসা মানুষজনরাই আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় সাইকেল বা ভ্যানে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে শুরু করেন। এই হামলায় মৃতদের মধ্যে যেমন বোড়োরা রয়েছেন, তেমনই আছেন বাংলাভাষী হিন্দু ও মুসলমান, রাজবংশীরাও। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল মৃত ও আহতদের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছেন। রাজ্য মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেতৃত্বে এক মন্ত্রী দল ঘটনাস্থলে গেছেন। কোকরাঝাড়সহ বোড়োল্যান্ড স্বশাসিত অঞ্চলটিতে কয়েক দশক ধরেই জঙ্গি তৎপরতা চলছে।
পৃথক বোড়োল্যান্ডের দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা এই সশস্ত্র আন্দোলন প্রায় ১৫ বছর আগে কিছুটা স্তিমিত হয়েছিল। জঙ্গিদের একটি গোষ্ঠী মূলগ্রোতে ফিরে এসে বোড়োল্যান্ড শান্তি চুক্তিতে সই করে। হাগ্রামা মইলারীর নেতৃত্বাধীন ওই গোষ্ঠীটির হাতেই এখনও পর্যন্ত বোড়োল্যান্ড স্বশাসিত এলাকার শাসনভার রয়েছে। তারা রাজ্যে ক্ষমতাসীন সরকারে বিজেপির জোটসঙ্গী।
তবে আইকে সংবিজিতের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীটি এখনও সশস্ত্র পথ থেকে সরে আসেনি। তারা মাঝে মাঝেই হামলা চালায় ওখানকার বাংলাভাষী মুসলমান, কখনও বা ক্রিশ্চান আদিবাসীদের ওপরে।
বোড়ো জঙ্গিদের অভিযোগ তাদের এলাকা দখল করে নিয়েছে বহিরাগত মুসলমান আর আদিবাসী ক্রিশ্চানরা। ২০১২ সাল থেকে একের পর এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে ওই হামলার পরে পরেই। ওই হামলার পরে লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বোড়োল্যান্ড এলাকার এই গণহারে বাস্তুচ্যুতির ঘটনাকে ‘এথনিক ক্লেনসিং’ বলে মন্তব্য করে থাকেন। সূত্র : বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন