বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বুনো হাতির ধাওয়ায় পোষা হাতির পলায়ন : উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ

প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জামালপুর জেলা সংবাদদাতা : ভারত-বাংলাদেশের যৌথ হাতি উদ্ধার দল সেই বুনো হাতিটি উদ্ধারের জন্য গত ২ দিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় অবস্থান নেয় মাদারগঞ্জের বীর ভাটিয়ানী গ্রামে। সেখানে বুনো হাতিটির উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য তারা চট্টগ্রাম এর কমলগঞ্জ থেকে একটি পোষা হাতি আনেন। ওই হাতির পিঠে চড়ে তিনজন আরোহী শনিবার দুপুরে বুনো হাতির কাছে যেতেই বুনো হাতি ধাওয়া করলে পালিয়ে যায় পোষা হাতি। এতে পোষা হাতি নিয়েও উদ্ধারকারীরা বুনো হাতি উদ্ধারে প্রথম দফায় ব্যর্থ হয়ে নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভারতের আসাম রাজ্য থেকে কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্ত পথে নদীতে ভেসে আসা সেই বুনো হাতিটি শনিবার সকাল থেকে বীর ভাটিয়ানী গ্রামে বন্যার পানিতে দাঁড়িয়েছিল। এসময় উদ্ধারকারী দলের প্রতিনিধিরা একটি ভেলার উপর পলিথিনের প্যাকেটে কিছু পাকা কলা ও এক কেজি লবণ তোলে ভেলাটি ধাক্কা দিয়ে বুনো হাতির সামনে পৌঁছালে কিছুক্ষণের মধ্যেই বুনো হাতিটি শুঁড় দিয়ে প্যাকেটটি খেয়ে ফেলে। এরপর বুনো হাতিটি পানির মধ্যে ধীর পায়ে হেঁটে ওই গ্রামের দক্ষিণে স্বল্প পরিসরের একটি ডাঙ্গায় গিয়ে উঠে। তখন যৌথ উদ্ধারকারী দলের সদস্য ভারতীয় প্রতিনিধি ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ কুশল কুমার শর্মা এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধি ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ সাইদ হোসেন ট্যাংকুলাইজার গান নিয়ে মাহুত সুজন এর সাথে পোষা হাতির পিঠে চড়ে বুনো হাতির পিছু নেয়। এসময় উদ্ধারকারীরা তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকেন। একপর্যায়ে পোষা হাতিটি তিনজন আরোহীকে নিয়ে পাট ক্ষেতের মাঝে বুনো হাতির কাছে পৌঁছতেই বুনো হাতিটি গর্জন করে তেড়ে আসে। তখন পোষা হাতিটি আরোহীদের নিয়ে ভয়ে দৌড়ে উল্টো দিকে পালিয়ে যায়। এঘটনার সময় পোষা হাতির উপর বসে থাকা ডাক্তারগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্যাংকুলাইজার ব্যবহার করতে পারেনি। এ সুযোগে বুনো হাতিটি সেখান থেকে উল্টো পথে দৌড়ে ঝিনাই নদীতে নেমে সাঁতরে মাদারগঞ্জের সিঁধুলি ইউনিয়নের চর ভাটিয়ানী গ্রামে বানের পানিতে গিয়ে উঠে এবং দিগি¦দিক ছুটাছুটি করতে থাকে। এসময় ঘটনাস্থলে প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক উৎসুক দর্শনার্থী ভিড় করে। এতে উদ্ধারকর্মীদের কাজে ব্যাঘাত ঘটলেও সেখানে থাকা পুলিশ দর্শকদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমিশিম খায়।
ওই হাতি উদ্ধার দলের প্রধান বন্যপ্রাণী পরিদর্শক অসিম মল্লিক বলেন, চারিদিকে বন্যার পানি। তাই হাতিটি কোন স্বল্প পরিসরের ডাঙ্গায় উঠলেও ট্যাংকুলাইজার করার পর দৌড়ে পানিতে নেমে অজ্ঞান হয়ে মারা যাবার আশঙ্কা থাকায় যেখানে সেখানে ট্যাংকুলাইজার ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও বুনো হাতিটি উদ্ধারে কাজ করার সময় ঘটনাস্থলে প্রচুর দর্শনার্থী ঝামেলা করে। তাই দর্শনার্থীদের চাপেও বুনো হাতিটি সুবিধাজনক জায়গায় উদ্ধার করা যাচ্ছে না। এরপরও বুনো হাতিটি উদ্ধারের জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন