কোভিড-১৯ সহ করোনাভাইরাস গ্রুপের যেকোনো জিন নষ্ট করে দেবে কেমব্রিজ বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত নতুন টিকা। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ভ্যাকসিনেরর জন্য ১.৯ মিলিয়ন পাউন্ড আর্থিক অনুদান দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। তারা জানিয়েছে, এর প্রথম পর্বের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু হবে আগামী অক্টোবরেই। তবে এটি অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের মতোই ডিএনএ ভেক্টর ভ্যাকসিন হলেও কেমব্রিজের তৈরি এই ভ্যাকসিনটির কিছু বিশেষত্ব আছে। বিটা-করোনাভাইরাসের পরিবারের যে কোনও ভাইরাল স্ট্রেনের সংক্রমণ রুখতে পারবে এই টিকা। ভ্যাকসিনটির উদ্ভাবকরা বলেছেন যে, তাদের পদ্ধতিটি মানবদেহে রোগ প্রতিরোধের প্রতিক্রিয়াটিকে শক্তিশালী করতে সমস্ত পরিচিত করোনাভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্সগুলো ব্যবহার করে এবং হাইপার-ইনফ্ল্যামেটরি ইমিউন প্রতিক্রিয়ার বিরূপ প্রভাব এড়াতে সহায়তা করতে পারে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাল জুনটিক্স ল্যাবরেটরির প্রধান জোনাথন হিনে বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমরা একটি ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্য রেখেছি যা কেবল সার্স-কোভি-২ থেকেই নয়, প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্য করোনাভাইরাস থেকেও সুরক্ষা দেবে।’ তিনি বলেন, ‘এই টিকার বৈজ্ঞানিক ফর্মুলা এখনই সামনে আনা যাবে না। এর বিশেষত্ব হল ভেক্টর ভাইরাসকে ব্যবহার করেই টিকা তৈরি হয়েছে তবে করোনার জিন সরাসরি নেয়া হয়নি। ল্যাবরেটরিতে বিশেষ উপায় সিন্থেটিক জিন বানানো হয়েছে যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে যে কোনও রকম আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) ভাইরাল স্ট্রেনের মোকাবিলা করার জন্য সক্রিয় করে তুলবে।’
জোনাথন আরো জানিয়েছেন যে, ডায়োস-কোভ্যাক্স২ নামক এই ভ্যাকসিনটি একটি ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) ভ্যাকসিন। করোনাভাইরাসের যত রকমের ভাইরাল স্ট্রেন হতে পারে তার অনুরূপ করেই সিন্থেটিক জিন ডিজাইন করা হয়েছে ল্যাবরেটরিতে। তার জন্য কম্পিউটার অ্যালগোরিদমে বহু সংখ্যক অ্যান্টিজেন বা ভাইরাল প্যাথোজেনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যে সমস্ত অ্যান্টিজেন মানুষের শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে তাদের শনাক্ত করে সেইমতো জিন ডিজাইন করা হয়েছে। এ জিন ভেক্টর ভাইরাসের সঙ্গে মিলিয়ে টিকা তৈরি হয়েছে। এ ডিএনএ ভেক্টর পদ্ধতিটি প্রাথমিক পর্যায়ের ট্রায়ালে অন্যান্য রোগজীবাণুর প্রতিরোধক প্রতিক্রিয়া বাড়াতে নিরাপদ এবং কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। তবে, অন্যান্য সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের তুলনায় পিছিয়ে পড়া সময়সূচিতে পরীক্ষা করা হলেও ডায়োস-কোভ্যাক্স ২ ভ্যাকসিনটি ঠান্ডা তাপমাত্রায় সংরক্ষণের প্রয়োজন হবে না এবং ইঞ্জেকশন ছাড়াই প্রয়োগ করা সম্ভব হবে, যা সম্ভবত ভ্যাকসিনটির ব্যাপক বিতরণ সহজতর করে দেবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন