শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ঐতিহ্য আর আধুনিকতায় অনন্য উদ্বোধন বিশ্ব শান্তি কামনায় শুরু রিও অলিম্পিক

প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৪ পিএম, ৬ আগস্ট, ২০১৬

স্পোর্টস ডেস্ক : গত কয়েকটি অলিম্পিকের মতো চাকচিক্য ছিল না; উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য বাজেট বরাদ্দও ছিল কম। ২০০৮ সালের বেইজিং আর ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকের মতো আধুনিক প্রযুক্তির ছড়াছড়ি। রিও ডি জেনিরোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যয়বহুল প্রযুক্তি কম ব্যবহার করে আয়োজকরা ভরসা করেছেন ব্রাজিলের মেধাবী শিল্পী আর কার্নিভাল সংস্কৃতির উপর।
সাম্বা, বোসা নোভা আর ফাংকের তালে ব্রাজিলের ঐতিহ্য, রেইনফরেস্ট আর বৈচিত্রপূর্ণ জনগোষ্ঠীর উপস্থাপন করা হলো বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে। যার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া উৎসবের। বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৫টায় নাচ দিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এরপর কোরিওগ্রাফে তুলে ধরা হয় ব্রাজিলের রেইনফরেস্ট আর আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে। তুলে ধরা হয় প্রায় পাঁচ শতাব্দী আগে পর্তুগিজরা পা রাখার পর থেকে ব্রাজিলের পথচলা। উদযাপন করা হয় দেশটির ইতিহাস আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের।
বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি টিভি দর্শককে পৃথিবীর যতœ নিতে আহ্বান জানাল ব্রাজিল। আবেদন এল বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্ট আমাজন রক্ষারও। এক দফা আতশবাজির উৎসবের পর মাঠে আসেন অ্যাথলেটরা। ২০৭টি দলের অ্যাথলেট প্যারেডে সবার আগে আসে অলিম্পিকের সূতিকাগার গ্রিস। এরপর বর্ণানুক্রমে আগে আসে আফগানিস্তান। সবার শেষে ব্রাজিল। স্বাগতিকদের আগে ২০৬ নম্বর দল হিসেবে স্টেডিয়ামে আসে অলিম্পিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গঠিত উদ্বাস্তুদের দল। গৃহ থেকে উচ্ছেদ হওয়া এই অ্যাথলেটরা খেলছেন অলিম্পিক পতাকা নিয়ে। ব্রাজিলের পর এই দলই সবচেয়ে বেশি অভিনন্দন পেয়েছে স্টেডিয়ামের প্রায় ৬০ হাজার দর্শকের কাছ থেকে।
বাংলাদেশের পতাকা ছিল অলিম্পিকে সরাসরি অংশ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করা প্রথম বাংলাদেশি অ্যাথলেট সিদ্দিকুর রহমানের হাতে। গলফে অলিম্পিক পদকের জন্য লড়বেন তিনি, যে পদক জয়ের সম্ভাবনা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কেউ তৈরি করতে পারেনি।
ব্রাজিলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট মিশেল তেমার দক্ষিণ আমেরিকার মাটিতে প্রথম অলিম্পিকের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। কিন্তু তার বক্তব্যের সময় দর্শকদের কিছু অংশ থেকে দুয়োধ্বনিও শোনা গেল। অলিম্পিক মশাল স্টেডিয়ামে বহন করে আনেন ব্রাজিলের সাবেক টেনিস খেলোয়াড় তিন বারের ফরাসি ওপেন জয়ী গুস্তাভো কুয়ের্তেন। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কিংবদন্তি পেলের অলিম্পিকের মূল মশালটা প্রজ্বলিত করার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেই সৌভাগ্য হয় অখ্যাত ম্যারাথন দৌড়বিদ এথেন্স অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জয়ী ভানদেরলেই দি লিমা। আকাশ আলোকিত করা আতশবাজির উৎসবে শেষ হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
আইওসি সভাপতি বাখ স্বভাবতই ইতিবাচক রিও অলিম্পিক নিয়ে, ‘ব্রাজিলের সবাই আজকে রাতের জন্য গর্বিত থাকতে পারেন। আপনারা রিও দে জেনেইরোকে একটি আধুনিক নগরে পরিণত করেছেন। ব্রাজিলের ইতিহাসের খুবই কঠিন সময়ে আপনারা এটা করেছেন। আমরা সব সময়ই আপনাদের উপর বিশ্বাস রেখেছি।’ রিও ২০১৬ -এর সভাপতি কার্লোস নুসমান জানালেন, তিনি এখন বিশ্বের সবচেয়ে ‘সুখী মানুষ’।
অলিম্পিকের ৩১তম আয়োজনে অংশ নিয়েছে ২০৭টি দেশ ও দল। অংশ নিচ্ছেন ১১ হাজারের বেশি অ্যাথলেট। ২৮টি ক্রীড়ার ৩০৬টি ইভেন্টে পদকের জন্য লড়বেন তারা। আয়োজকরা আশা করছেন, অলিম্পিক উপলক্ষে আসবেন ৫ লাখেরও বেশি পর্যটক। তবে উদ্বোধনের আগের দিন পর্যন্ত মোট ৭৫ লাখ টিকেটের মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি টিকেট অবিক্রিত রয়ে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে অলিম্পিকে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অলিম্পিকের বিভিন্ন ভেন্যু, অলিম্পিক ভিলেজ, বিমানবন্দর ও প্রধান সড়কগুলোতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে প্রায় ৫৫টি দেশের ৮৫ হাজার নিরাপত্তাকর্মী, যা লন্ডনে ২০১২ অলিম্পিকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
অর্থনৈতিক মন্দা আর রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে ব্রাজিলের ইতিহাসের এক সংকটময় সময়েই হচ্ছে এই অলিম্পিক। রিওতে অলিম্পিক মশাল পৌঁছানোর অনুষ্ঠানেও হয়েছে বিক্ষোভ। আছে জিকা ভাইরাসেরও হুমকি, যে জন্য ব্রাজিলে আসেননি বেশ কিছু তারকা অ্যাথলেট। আছে ডোপিং কেলেংকারি নিয়ে বিতর্ক। শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অবকাঠামো আর কিছু ভেন্যু নিয়েও আপত্তি উঠেছে। আয়োজনে কিছু ঘাটতি আর অনেক সমস্যা মাথায় নিয়েও পাশের কোরকোভাদো পাহাড়ের উপরে হাত বাড়িয়ে থাকা ক্রাইস্ট দ্য রিডিমারের মতো রিও ডি জেনিরোও উৎসবে যোগ দিতে স্বাগত জানাচ্ছে বিশ্ববাসীকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
রাজ্জাক ৭ আগস্ট, ২০১৬, ১২:৪২ পিএম says : 0
বাংলাদেশি প্রতিযোগিদের জন্য শুভ কামনা রইলো।
Total Reply(0)
Sabbir ৭ আগস্ট, ২০১৬, ১২:৪৩ পিএম says : 0
Nice program
Total Reply(0)
Abu Noman ৭ আগস্ট, ২০১৬, ১২:৪৪ পিএম says : 0
বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি টিভি দর্শককে পৃথিবীর যতœ নিতে আহ্বান জানাল ব্রাজিল। আবেদন এল বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্ট আমাজন রক্ষারও। ar amra sundhorbon dongso korsi
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন