বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দেশে প্রথমবারের মতো পোস্ট কোভিড ফলোআপ ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাঁদের দীর্ঘ মেয়াদী ফলোআপের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পোস্ট কোভিড ফলোআপ ক্লিনিক চালু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়–য়া শনিবার (২৯ আগস্ট) বহির্বিভাগ-১ এই ক্লিনিক উদ্বোধন করেন। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ইন্টার্নাল মেডিসিন বর্হি বিভাগে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ফলোআপ সেবা প্রদান করা হবে। এই ক্লিনিকটি প্রাইমারী কেয়ার সেন্টার হিসেবে কাজ করবে। এখান থেকে যাদের অতি বিশেষায়িত সেবা যেমন-পালমোনলজি, কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, নিউরোলজি, সাইকিয়াট্রি, ফিজিক্যাল মেডিসিনসহ অন্যান্য বিভাগের পরামর্শের প্রয়োজন হবে, তাদের সংশ্লিষ্ট বর্হিবিভাগে রেফার করা হবে।
উদ্বোধনকালে প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়–য়াসহ আরো উপস্থিত ছিলেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, প্রফেসর ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. এ বিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. জুলফিকার আহমেদ আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়–য়া বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। এই শোককে কর্মস্পৃহা, একাগ্রতা, সেবার মানসিকতা ও নিষ্ঠার সহিত শক্তিতে পরিণত করে বিশ্ববিদ্যালয় করোনা অতিমারী মোকাবেলা করে যাচ্ছে। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের পর থেকে ফিভার ক্লিনিক, টেলিমেডিসিন সেবা, আউটডোর সেবা, পিসিআর ল্যাব সার্ভিস, পৃথক কোভিড-১৯ হাসপাতাল স্থাপন অর্থাৎ করোনা সেন্টার চালু ও বহুবিধ গবেষণার মাধ্যমে বিএসএমএমইউ এই দুর্যোকালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বাংলাদেশে অগ্রজ ভূমিকা পালন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসএমএমইউ’তে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ ফলোআপ ক্লিনিক চালু করা হলো।
তিনি বলেন, আমরা জানি করোনা মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গকে আক্রমণ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। একারণে মাঝারি ও তীব্র কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী ফলোআপের প্রয়োজন। যুক্তরাজ্য, চীন, ইতালীসহ বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যেই পোস্ট কোভিড-১৯ ফলোআপ সেবা চালু হয়েছে। ফলোআপের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষণ ও প্রতিক্রিয়াগুলো চিহ্নিত করতে পারলে বিপুল সংখ্যক রোগীকে দীর্ঘ মেয়াদী রোগের স্থায়ীত্ব এবং মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের প্রায় ৫ বছর ফলোআপ করার প্রয়োজন হবে। যার জন্য বৃহৎ স্থান সংকুলানের প্রয়োজন। আপাতত মেডিসিন বর্হিবিভাগে চালু হলেও পরবর্তীতে তা আরো বৃহৎ পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তঃ বা বর্হিবিভাগে কোথাও স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হবে। এই ফলোআপের অংশ হিসেবে রোগীদের যে ল্যাবরেটরী ও রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে তা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভব। এই ক্লিনিকটি পরিচালনায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ইমপেরিয়াল কলেজ, লন্ডন কারিগরী সহায়তা প্রদান করছে। তাছাড়া এই ক্লিনিকটি কোভিড-১৯ গ্লোবাল ফলোআপ কনসোর্টিয়ামের একটি অংশ। এই ফলোআপ ক্লিনিকটি সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনার নিমিত্তে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন