শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নিঃস্ব শত শত পরিবার

নোয়াখালীর বিশাল এলাকা মেঘনায় বিলীন

বিশেষ সংবাদদাতা, নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

নোয়াখালীর উপকূলীয় ও দ্বীপাঞ্চলকে বলা হয় অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল। কিন্তু সেই সম্ভবানময় অঞ্চলের বিশাল অংশ প্রতি বছর মেঘনায় বিলীন হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিলীন হওয়ার পাশাপাশি হাজার হাজার পরিবারও রাতারাতি ভিখেরিতে পরিণত হচ্ছে। সর্বস্ব হারিয়ে শত শত গৃহহীন পরিবার বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিচ্ছে।

হাতিয়ায় প্রতি বছর অসংখ্য ডুবো চর জেগে উঠলেও মূল ভূখন্ড ক্রমান্বয়ে সঙ্কুচিত হচ্ছে। সত্তরের দশকে মূল ভূখন্ডের আয়তন ছিল প্রায় ৫৫০ বর্গকিলোমিটার হলেও মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে বর্তমানে এর আয়তন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪শ’ বর্গকিলোমিটার। অর্থাৎ দেড়শ’ কিলোমিটার জনপদ মেঘনার করাল গ্রাসে নিমজ্জিত হয়েছে। নব্বইয়ের দশক থেকে মূল ভূখন্ডের চারদিকে প্রায় অর্ধ শতাধিক চর জেগে উঠলে এর কয়েকটি এখন ভাঙনের শিকার। হাতিয়া মূল ভূখন্ডের নলচিরা, চরকিং, চরঈশ্বর ও সোনাদিয়া ইউনিয়নের বিশাল এলাকা বিলীন হচ্ছে।

নব্বইয়ের দশকে হাতিয়া মূল ভূখন্ডের উত্তরে বিশাল ভূমি জেগে উঠে। বর্তমানে সেখানে হরণী ও চানন্দি নামে দু’টি ইউনিয়ন রয়েছে। কিন্তু এ দু’টি ইউনিয়নের দক্ষিণ পাশের্^ প্রতি বছর বিশাল এলাকা বিলীন হচ্ছে। অপরদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নে ছোট ফেনী নদীর ডান তীরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এখানে সিসি বøক দ্বারা ভাঙনরোধ প্রকল্পের কাজ পরিচালিত হলেও করোনাভাইরাসের কারণে উক্ত কাজ আপাতত স্থগিত রয়েছে।

হাতিয়া উপজেলার উত্তরে হরণী ও চানন্দি ইউনিয়নের পূর্ব পাশের্^ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্বর্ণদ্বীপ। স্বর্ণদ্বীপ থেকে দক্ষিণে ২০ কিলোমিটার নদী পেরিয়ে ভাসানচরের অবস্থান। ভাসানচরের ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে হাতিয়া মূল ভূখন্ড। বিভিন্ন কারণে এতদ্বঞ্চল ক্রমান্বয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কিন্তু মূল ভূখন্ড ও আশপাশের ইউনিয়নগুলো যে হারে ভাঙছে তাতে করে পুরো অঞ্চল মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। হাতিয়া মূল ভূখন্ডের জাহাজমারা ইউনিয়নের মোক্তারিয়ায় প্রতিদিন বিশাল এলাকা বিলীন হচ্ছে। এছাড়া হাতিয়া চেয়ারম্যানঘাট এলাকা ও পূর্বপাশের্^ও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, কয়েক বছর পূর্বে হাতিয়া মূল ভূখন্ডের তমরদ্দি ইউনিয়নের পশ্চিমপাশে সিসি ব্লকের মাধ্যমে ভাঙনরোধ হওয়ায় জনসাধারণ এর সুফল ভোগ করছে। তেমনিভাবে হাতিয়া উপজেলার মূল ভূখন্ডে তৎসহ হরণী ও চানন্দি ইউনিয়নের ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। হাতিয়া উপজেলাকে নদী ভাঙনরোধ করা গেলে এর বহুমুখী সুফল পাওয়া যাবে। এরমধ্যে রয়েছে বিশাল নতুন চর জেড়ে ওঠার পাশাপাশি গৃহহীনদের পূর্ণবাসন, চাষাবাদযোগ্য জমি বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এখানকার লাখ লাখ অধিবাসী লাভবান হবে।

এ বিষয়ে হাতিয়া আসনের এমপি আয়েশা ফেরদাউস ইনকিলাবকে জানান, হাতিয়া মূল ভূখন্ডের নলচিরা নদী ঘাট এলাকা ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে কয়েক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়। এতে শতভাগ সুফল পাওয়া গেছে। আগামীতে স্থায়ীভাবে সিসি ব্লকসহ ভাঙনরোধে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, চরঈশ্বর, সোনাদিয়া, জাহাজমারা ইউনিয়নের মোক্তারিয়া, হরনী ও চানন্দি ইউনিয়নের ভাঙনরোধ প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন