করোনাভাইরাস চিকিৎসায় গত বুধবার এক উল্লেখযোগ্য তথ্য সামনে এসেছে। সাতটি আন্তর্জাতিক ট্রায়াল শেষে দেখা গেছে মরণাপন্ন এবং গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় কর্টিকসস্টেরয়েড (Corticosteroid Drugs) ব্যবহার করলে মৃত্যুর আশঙ্কা ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যায়। এই গবেষণার ভিত্তিতেই করোনা চিকিৎসা পদ্ধতির নির্দেশিকায় পরিবর্তন এনেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ট্রায়াল থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গেছে স্টেরয়েড গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের বাঁচার আশা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। একটি বিবৃতিতে গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘গুরুতর অসুস্থ প্রায় ৬৮ শতাংশ কোভিড রোগী কর্টিকস্টেরয়েড চিকিৎসায় ভালো সাড়া দিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছেন। অন্যদিকে ৬০ শতাংশ রোগী কর্টিকস্টেরয়েড ব্যবহার না করেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।’
ডবিøউএইচও-এর ক্লিনিকাল কেয়ার লিড জ্যানেট ডিয়াজ জানিয়েছেন, হু তাদের নির্দেশিকায় বদল এনেছে। গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় স্টেরয়েডের ব্যবহারকে জোরাল সমর্থন করেছে। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া লাইভ সাক্ষাৎকারে হু-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘তথ্য প্রমাণ বলছে গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করলে প্রতি হাজার রোগীর মধ্যে ৮৭ জন কম মারা যাবেন। অর্থাৎ ৮৭ জনের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।’
ব্রিটিনের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকাল স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড এপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক জোনাথান স্টার্ন-এর মতে, ‘স্টেরডের খরচ কম এবং সহজেই পাওয়া যায়। আমাদের সমীক্ষায় দেখা গেছে এই স্টেরয়েড গুরুতর কোভিড রোগীদের মৃত্যু আটকাতে সক্ষম।’
চীন, ব্রিটেন, ব্রাজিল, কানাডা, ফ্রান্স, স্পেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা স্টেরয়েডের উপর ট্রায়াল করে দেখেছেন। প্রতিটি দেশের গবেষকদের কাছ থেকে একই তথ্য পাওয়া গেছে। বয়স এবং লিঙ্গ নির্বিশেষে স্টেরয়েড মরণাপন্ন রোগীকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে। এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকান মেডিকাল অ্যাসোসিয়েশনের (American Medical Association) জার্নালে।
অন্যদিকে, বিজ্ঞান পত্রিকা ‘সেল’ এবং ‘নেচার কমিউিনিকেশনে’ দু’টি গবেষণাপত্র সদ্য প্রকাশিত হয়েছে। দু’টিতেই বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, করোনার প্রতিষেধক নাকে দিলেও সার্স-কোভ ২-র বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা মিলছে।
একদল গবেষক এক ধাপ এগিয়ে দেখিয়েছেন, বহুল প্রচলিত পদ্ধতি ইন্ট্রামাসকিউলার অর্থাৎ পেশিতে ভ্যাকসিন দেওয়ার চেয়েও কার্যকর হচ্ছে ইন্ট্রান্যাজাল পদ্ধতি। বেশি কাত হচ্ছে করোনা। সবচেয়ে বড় কথা, এই টিকা দেওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, নাসারন্ধ্রে বা শ্বাসতন্ত্রে ঢোকা মাত্রই ভাইরাস মেরে ফেলে। সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইমস/দ্য গার্ডিয়ান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন