শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দৌলতদিয়ায় ফেরিঘাটে যাত্রীদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গোয়ালনন্দ/আরিচা সংবাদদাতা : পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-পথে এখনও স্বাভাবিক হয়নি ফেরি সার্ভিস। দৌলতদিয়ায় চারটি ঘাটের মধ্যে এখনও তিনটি ঘাট বন্ধ রয়েছে। ফলে উক্ত নৌ-পথে ফেরি পারাপার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘাটে আটকে পড়া যানবাহন শ্রমিকরা চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। পদ্মা নদীর ভাঙনে গত রোববার দৌলতদিয়ার চারটি ফেরি ঘাটই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেলে এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে যানবাহন শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধু সেতুসহ বিকল্প পথে চলাচল করছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন জানান, জরুরি ভিত্তিতে গত সোমবার দৌলতদিয়ায় পাইলিং ও বালুর বস্তা ফেলে ৩নং ফেরি ঘাট পূণঃস্থাপন করায় ডাম্প ও কে-টাইপ ফেরিযোগে যানবাহন লোড-আনলোডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু পন্টুন দীর্ঘ দিনের পুরানো এবং লক্কর-ঝক্কর হওয়ার কারণে রো-রো ফেরি ভিড়তে পারছে না। উক্ত ঘাটের একটি পকেট দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় খুব সীমিত আকারে ছোট ফেরির মাধ্যমে হালকা যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এতে উভয় ঘাটে যানবাহনের সংখ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া, দৌলতদিয়া ১, ২ ও ৪ নং ফেরি ঘাট দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দু/একদিনের মধ্যে তা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নদীতে প্রচ- স্রোতের কারণে ঘাট মেরামত করে পন্টুন স্থাপন করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। তবে খুব দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। খুব তাড়াতাড়িই উক্ত সমস্যার সমাধান হবে। এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দৌলতদিয়া ঘাটে নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করছে বলে তিনি জানান।
বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারিদের গাফিলতি ও নিযুক্ত ঠিকাদারের উদাসীনতায় সময় মতো ঘাট মেরামত বা সংস্কার না করায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি বন্যা পদ্মার প্রবল স্রোত কারণে গত শনিবার দৌলতদিয়ার ফেরি ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকে। আটকে পড়া যানবাহনের যাত্রীসাধারণ ও মালিক-চালকসহ সংশ্লিষ্টরা চরম দুর্ভোগ পোহায়।
এদিকে পাটুরিয়া রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ রুটে লঞ্চে যাত্রী চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্তৃপক্ষের পরামর্শে অনেকেই বিকল্প পথ হিসেবে যমুনা সেতু ও মাওয়া ঘাট দিয়ে গন্তব্যে যাতায়াত করছে। এতে প্রত্যহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যানবাহন মালিক-চালকদের বাড়তি খরচ হচ্ছে বলে তারা জানান।
শিবচর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পদ্মায় অব্যাহত হারে পানি কমায় শিমুলীয়া-কাওড়াকান্দি নৌ-রুটে নাব্যতা সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করছে ফেরিগুলো ধারণ ক্ষমতার কম যানবাহন নিয়ে কোনমতে চলছে। এরসাথে তীব্র স্রোতে ফেরি চলতেও বিলম্ব হচ্ছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুট বন্ধ থাকায় এ রুটে যানবাহনের চাপও বৃদ্ধি পেয়েছে । ফলে ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ছে এরুটে।
বিআইডব্লিউটিসিসহ একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে কমতে থাকায় এরুটের নৌ-চ্যানেলে নাব্যতা সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। পদ্মায় তীব্র স্রোত থাকায় প্রচুর পরিমাণ নদী ভাঙনের পলি আসায় পরিস্থিতি আরো নাজুক করে তুলেছে নৌ চ্যানেলের। দ্রুত পানি কমায় এরুটের লৌহজং টার্নিংসহ বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র নাব্য সঙ্কট। এতে করে এরুটের দীর্ঘ ড্রাফটের রো রো ফেরিগুলো পড়েছে গভীর সঙ্কটে। ধারণ ক্ষমতার কম যানবাহন নিয়ে রো রো ফেরিগুলো বর্তমানে শুধু বাস ও হালকা যানবাহন নিয়ে চলতে গিয়েও ডুবোচরে ধাক্কা খাচ্ছে। নাব্যতা ধরে রাখতে ২টি ড্রেজার কাজ শুরু করলেও তীব্র স্রোতের কারণে তা ব্যহত হচ্ছে। স্রোতের গতিবেগের কারণে চলমান ফেরিগুলোরও দীর্ঘ সময় লাগছে। পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া রুট বন্ধ থাকায় শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুট হয়ে যানাবহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনগুলো চরম বিপাকে পড়ছেন। ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থেকে পার হতে হচ্ছে যাত্রীবাহী যানগুলোকে আর পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকে পড়ছে সিরিয়ালে।
বিআইডব্লিউটিসি কাওড়াকান্দি ঘাট ম্যানেজার আঃ সালাম বলেন, নাব্যতা সঙ্কটের কারণে ফেরিগুলো ধারণ ক্ষমতার কম যানবাহন নিয়ে পারাপার হচ্ছে । ফলে ঘাটে কিছু যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। নাব্যতা সঙ্কট নিরসনে নদীতে ড্রেজিং চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন