এম এম এমরান কাদেরী, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) থেকে
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার রেলক্রসিংগুলোতে প্রায় দেড় যুগ ধরে নেই কোনো গেটম্যান এবং গেট। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত এসব রেলক্রসিং পারাপার হচ্ছে হাজার হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাধারণ মানুষ ও যানবাহন।
উপজেলা সদরসহ ব্যস্ততম সড়কগুলোয় রেলক্রসিং গেট ও গেটম্যান না থাকায় প্রায় সময় ঘটে যাচ্ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ফলে নিত্য ক্ষতিগ্রস্তসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা মাথায় নিয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী ও কোমলমতি শিশুরা। তবে প্রায় এক দশক আগে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেলক্রসিং এর সবকটি স্থানে ‘নিজ দায়িত্বে পারাপার হউন’ লেখা সাইনবোর্ড লাগিয়ে দায় সেরেছেন।
জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর বটতল স্টেশন থেকে দোহাজারী পযর্ন্ত প্রতিদিন দু’টি যাত্রীবাহী রেল আসা-যাওয়া করে। সাঁজ সকালে দোহাজারী থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ও সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারীর উদ্দেশ্যে যাতায়াত করে থাকে এ রেল। যে সময় বেশির ভাগ শিশু শিক্ষার্থীসহ কর্মমুখী মানুষের আনাগোনা থাকে। ফলে এ সময়টাই প্রতিদিন পারাপার হতে হচ্ছে মারাত্মক প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে। যেখানে শত শত শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে, সেখানে কয়জনকেই সাধারণ মানুষ সুরক্ষা দিতে পারে গেট ও ম্যানহীন এসব রেল ক্রসিংয়েÑএমন প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়দের।
এদিকে প্রতিদিনের দু’টি রেল চলাচল ছাড়াও এ লাইনে প্রায়ই কোন ধরণের সিগণ্যাল বা সংকেত ছাড়া যাতায়াত করে থাকে দোহাজারীতে গড়ে উঠা পিকিং পাওয়ার বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের জন্য ফার্নেস অয়েলবাহী ওয়াগণ রেল। ফলে প্রতিটি ক্রসিংয়ে গেট ও গেটম্যান ছাড়া কোন ভাবেই চট্টগ্রাম দোহাজারী রেল লাইন নিরাপদ নয়। বড়ধরণের দূর্ঘটনার সম্ভাবনা যে কোন সময়ই থাকার বিষয়টি জেনেও না জানার ভান করে দীর্ঘদিন অবহেলায় থাকতে থাকতে এখনো নীরব দর্শকের ভূমিকায় রেল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালুরঘাট সেতু থেকে বেঙ্গুরা রেল ষ্টেশনের প্রায় সোয় কিলোমিটার দক্ষিণে শাকিরপুল (শেরেপুল) পর্যন্ত বোয়ালখালী উপজেলার উপর দিয়ে যাওয়া রেল সড়কে রয়েছে বেশ কয়েকটি মৃত্যুফাঁদ। বাহির সিগন্যাল হযরত পেতন আউলিয়া সড়ক, গোমদন্ডী সদর তুলাতল থানা সড়ক, বুড়িপুকুর পাড় কানুনগোপাড়া (পদুয়া) সড়ক, পূর্ব গোমদন্ডি বটতলীতে সারোয়াতলী চৌধুরী পাড়া সড়ক, ও বেঙ্গুরা ষ্টেশন হয়ে দরবার শরীফ সড়কের ব্যস্ততম রেলক্রসিং গুলো মারাত্ত্বক অনিরাপদ। এসব ক্রসিং দিয়ে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে যান ও জনচলাচল করছে সব শ্রেণীর এলাকাবাসী।
এ দিকে দোহাজারী লাইনে রেলক্রসিংয়ে গেট ও ম্যান না থাকায় ইতিপূর্বে বহু দূর্ঘটনা ঘটেছে। এরপরও টনক নড়েনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। এলাকাবাসীর অভিযোগ কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এভাবে চলতে থাকলে প্রাণহানি সহ বড় ধরণের দূর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। আর এ দায়ভার নেবে কে? এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
গোমদন্ডী রেল স্টেশন মাস্টার মো. আবু জাফর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বোয়ালখালীর ক্রসিংগুলো অনিরাপদ, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। রেল লাইনের নতুন সংযোজনসহ পর্যায়ক্রমে সবই করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন