শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

প্রশ্নবিদ্ধ পদোন্নতি পাউবো মহাপরিচালকের

প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাখাওয়াত হোসেন বাদশা : সরকারি চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে নিজের পদোন্নতি নিজেই নিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মহাপরিচালকের চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত মো. জাহাঙ্গীর কবির। সরকারি চাকরি বিধিমালা মোতাবেক পদোন্নতিযোগ্য কোনো ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট সভায় উপস্থিত থাকার বিধান নেই। কিন্ত বর্তমান মহাপরিচালক নিজের পদোন্নতি সভায় নিজেই সভাপতিত্ব করেছেন এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী থেকে পদোন্নতি নিয়ে প্রধান প্রকৌশলী হয়েছেন। গত ৮ আগস্টে পাউবোর সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় এমন বিধি-বহির্ভূত ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, পাউবো মহাপরিচালক নিজের পদোন্নতি নিজেই নিতে পারেন কিনা এবং তার এই পদোন্নতি বিধিসম্মত হয়েছে কিনা এ নিয়ে তোলপাড় চলছে গোটা পানি উন্নয়ন বোর্ডজুড়ে। এই পদোন্নতি নিয়ে পাউবো’তে যেমন আলোচনার ঝড় বইছে; তেমনি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একজন সিনিয়র মন্ত্রী যিনি ইতোপূর্বেও একবার পানি সম্পদ মন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন-তার অধিনস্থ একটি দপ্তরে এমন নিয়ম-বহির্ভূত ঘটনা কীভাবে ঘটলো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন ঊঠেছে-একজন ব্যক্তিকে পর পর তিনটি উচ্চ পদে চলতি দায়িত্ব প্রদান করা যায় কিনা? একইসাথে একজন জুনিয়রের অধিনে একজন সিনিয়র চাকুরি করতে পারেন কিনা?
গত ৮ আগস্টে পাউবোর বাছাই কমিটি-১ এর সভায় কমিটির চেয়ারম্যান ও বোর্ডের মহাপরিচালক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন-পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অর্থ), অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ইস্টার্ন রিজিওন), অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ওয়েস্টার্ন রিজিওন) এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা)। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ধরনের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এনএসআই এবং সিটি এসবির প্রতিবেদন থাকাটা অপরিহার্য হলেও এক্ষেত্রে এ ধরনের প্রতিবেদন ছাড়াই মহাপরিচালক তার নিজের পদোন্নতি নিজেই নিয়েছেন বলে প্রশ্ন উঠেছে।
একইভাবে প্রশ্ন তোলা হয়েছে বর্তমান মহাপরিচালক একজন জুনিয়র হয়ে কীভাবে তার সিনিয়ন কর্মকর্তা প্রধান প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত মহাপরিচালকের দায়িত্বে নিয়োজিত আবদুল হাই বাকী, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অর্থ) এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) এর বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করবেন।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় একাধিক্রমে তিনটি চলতি দায়িত্ব দিয়ে মো. জাহাঙ্গীর কবিরকে মহাপরিচালক পদে বসান। সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো জ্যৈষ্ঠতা লঙ্ঘন করা যাবে না. যদি না তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের বিভাগীয় মামলা না থাকে। জানা যায়, তাকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী থেকে অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং এর তিন মাসের মধ্যেই মহাপরিচালকের চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়। একজন ব্যক্তিকে মহাপরিচালক বানাতে কেন এই নিয়মের ব্যত্যয় এ নিয়েও নানা মহলে চলছে গুঞ্জন।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে মো. জাহাঙ্গীর কবির অজানা কারণে সচিব মর্যাদার সমতুল্য ডিজি পদে আসীন করা হয়। কিন্ত চাকরি বিধিমালা মোতাবেক তাকে ডিজি পদে পদোন্নতি দেয়ার আগে তার সিনিয়র হিসেবে যিনি রয়েছেন তার বিষয়টি সুরাহা করা দরকার ছিল। প্রয়োজনে তাকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে দিয়ে কিম্বা তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া যেত। কিন্ত তা না করে পাউবো’তে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
অভিজ্ঞমহল মনে করেন, সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর ডিজি পদে গদীনশীন হওয়ার পর পাউবোর যে ভাবমূর্তি সংকট ও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে তার মূল্যায়ন করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন