বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ভারী বর্ষণ : নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গতকাল ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত ছিল। প্রবল বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আমনের বীজতলাসহ ফসলী জমি পুনরায় প্লাবিত হয়েছে।
বরিশাল থেকে বিশেষ সংবাদদাতা, মৌসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনজীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। অমাবস্যা ও পূর্ণিমার মধ্যবর্তী সময়ের এ মৌসুমি নিম্নচাপটি গতকাল দুপুরের দিকে প্রবল বর্ষণ নিয়ে বরিশাল ও খুলনা অঞ্চল অতিক্রমকালে দেশের পশ্চিম উপকূল জুড়ে ঝড়ো হাওয়াসহ ব্যাপক দুর্যোগ নেমে আসে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল দুপুরে মাত্র এক ঘণ্টায় বরিশালে ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এসময় প্রায় ২০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়াও বয়ে যায়। গতকাল দুপুরে দু’দফার প্রবল বর্ষণে বরিশাল মহানগরীর অনেক এলাকাই পানিতে তলিয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চলসহ গোটা উপকূলীয় এলাকায় সাগরের জোয়ারের উচ্চতাও আবার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূলের প্রায় সব দ্বীপ ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান খাদ্য ফসল আমনের বীজতলা ও রোপা আমনের বহু জমি পুনরায় প্লাবিত হয়েছে। মাত্র দুুদিন আগেই এসব জমি টানা ৭ দিনের প্লাবন থেকে মুক্ত হয়েছিল।
সাগর মাঝারি মাত্রায় উত্তাল রয়েছে। কয়েক হাজার মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলার কুয়াকাটার অদূরে আলীপুর-মহীপুর বেসিনসহ বিভিন্ন মৎস্য বন্দরগুলোতে আশ্রয় নিলেও অতি স্বল্প সময়ের নোটিশে আরো বিপুলসংখ্যক নৌকা ও ট্রলার নিরাপদে ফিরতে পারেনি বলে জানিয়েছে নিরাপদে ফেরা ট্রলারের চালক ও মাঝিগণ। পায়রাসহ সবকটি সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবকটি নদী বন্দরে এক নম্বরের পরিবর্তে ২ নম্বর সংকেত জারি করা হয়েছে। ফলে অনধিক ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে সব যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল দুপুরের পরে প্রবল বর্ষণসহ ঝড়ো হাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে উপকূলীয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নিম্নচাপে পরিণত হয়। মঙ্গলবার রাত ৯টায় আবহাওয়া অফিস থেকে উপকূলীয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় অবস্থানরত মৌসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টির খবর জানায়। এর প্রভাবে গতরাত রাত ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলসহ উপকূলীয় এলাকায় এবং দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কার সতর্কতা জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। এমনকি বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসমূহের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নি¤œাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৪ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হবার খবরও জানায় আবহাওয়া বিভাগ। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরমর্শ দেয়া হয় মঙ্গলবার রাতের বুলেটিনে। গত রাতের সর্বশেষ বুলেটিনে এ সতর্কতা বহাল রাখা হয়।
রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সমগ্র উপকূলীয় এলাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগর থেকে মেঘমালা ধেয়ে আসছিল। তবে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা দুপুরের তুলনায় কিছুটা কম থাকলেও আবহাওয়া বিভাগ আগামীকাল পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। আগামীকালের পরবর্তী সময়ে বৃষ্টিপাতের এ প্রবণতা কিছুটা হ্রাস পাবার কথাও বলেছে আবহাওয়ার বুলেটিনে।
উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও বর্ষণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমি নিম্নচাপের সক্রিয় প্রভাবে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ দেশের সমুদ্র উপকূলভাগ, চর ও দ্বীপাঞ্চলে গতকাল (বুধবার) দিনভর মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে। দুপুরের পর কালো মেঘে আকাশ ঢেকে যায় তবে বৃষ্টিপাত কমে যায়। সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। সেই সাথে উপকূলের সর্বত্র দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া এবং প্রবল জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজের আমদানি পণ্য লাইটারিং খালাস কাজ ব্যাহত হচ্ছে। গভীর সাগরে মাছ শিকার কমে গেছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও প্রবল জোয়ারে চট্টগ্রাম মহানগরীর নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হচ্ছে। জনদুর্ভোগ বেড়ে গেছে।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, উপকূলীয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থানরত মৌসুমি নি¤œচাপটি উপকূলীয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে গতকাল দুপুর ১২টায় যশোর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরদিকে অগ্রসর হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার ও নি¤œচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
সমুদ্রবন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। নি¤œচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের উপর দিয়ে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বা আরো অধিক বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
টানা বর্ষণে সাতক্ষীরা জেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত
সাতক্ষীরা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, পানি নিষ্কাশনের কোনো পথ না থাকায় গত দু’দিনের টানা বর্ষণে সাতক্ষীরা জেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের, ফসলি জমি ও পুকুর। ফলে অসংখ্য বাড়ি-ঘর ও রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। জেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ এখন পানিবন্দী হয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন।
সাতক্ষীরা জেলা শহরের ইটাগাছা, খড়িবিলা, কামাননগর, বউবাজার, বকচরা, পুরাতন সাতক্ষীরা, বদ্দিপুর কলোনি, মধুমল্লারডাঙ্গিসহ বিভিন্ন এলাকার নি¤œাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। শত শত কাঁচা ঘর-বাড়ি ধ্বংসের উপক্রম হয়েছে। অসংখ্য চিংড়ি ঘের, ফসলি জমি ও পুকুর ভেসে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা বিসিক শিল্পনগরী বেনেরপোতা।
এদিকে, টানা বৃষ্টিতে জেলার আশাশুনি উপজেলার কয়েক হাজার বিঘা জমির ঘের ভেসে একাকার হয়ে গেছে। বাড়ি-ঘরেও পানি উঠে গেছে।
অপরদিকে, বৃষ্টিতে জেলার শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, দেবহাটা ও তালা উপজেলার নি¤œাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। এসব অঞ্চলের হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিত বেড়িবাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের তৈরি করে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জনপ্রভাবশালী ঘের মালিকরা পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে চিংড়ি ঘের করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘের মালিকরা পানি নিষ্কাশনের কোনো পথ রাখেননি। যার ফলে একটু বৃষ্টি হলেই এসব এলাকার বাড়ি-ঘর ও রাস্তায় পানি উঠছে। তাই মাছের ঘের কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা অতীব জরুরি। আর তা না হলে এলাকার হাজার হাজার মানুষ স্থায়ীভাবে পানিবন্দী হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে অবিলম্বে পানি নিষ্কাশনে স্থানীয়রা জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সীমাহীন দুর্ভোগে যশোরবাসী
যশোর থেকে রেবা রহমান জানান, মৌসুমের সর্বোচ্চ ও বিরামহীন বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে যশোরের নি¤œাঞ্চল। যশোরসহ এ অঞ্চলের বিশেষ করে শহরাঞ্চলের মানুষ দিনভর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মানুষ পারতপক্ষে ঘরের বের হননি। এক অর্থে মানুষ ছিলেন ঘরবন্দী। বৃষ্টি কখনও কম কখনো বেশি। সূর্যের মুখ দেখা যায়নি বুধবার সারাটা দিন। দোকানপাটও প্রায় বন্ধ ছিল। ভাসমান মানুষের কষ্টের সীমা ছিল না। যশোরের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। নিচু এলাকার জমির ফসলাদি বিশেষ করে সবজির ক্ষতি হয়েছে অপূরণীয়।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শ্রাবণের অবিরাম বর্ষণের এমন পরিস্থিতি গত কয়েক বছরে দেখা যায়নি বলেও অনেকেই জানিয়েছেন। আর এই বৃষ্টিতে পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন নি¤œাঞ্চলের মানুষ। শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় ড্রেন উপচে রাস্তাঘাট তলিয়ে পানি প্রবেশ করেছে অসংখ্য বাড়িতে।
বুধবার দিনভর যশোর শহর ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের অল্পবিস্তর বৃষ্টিপাতের পর মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিপাতে শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত পানির চাপে অনেক এলাকা ভেসে গেছে। ভারী বর্ষণে শহরের নতুন খয়েরতলা, নওদাগা. খড়কি, রেলগেট, বেজপাড়া, টিবি ক্লিনিকপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়া, শংকরপুর, মিশনপাড়া, উপশহর, চাঁচড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, নাজিরশংকরপুর, বকচর, আবরপুরসহ শহরের নি¤œাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। শংকরপুর, বেজপাড়া, খড়কি, কারবালা, স্টেডিয়ামপাড়ার অনেক বাড়ি পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার ড্রেন ছাপিয়ে উপচেপড়া পানি সড়ক পার হয়ে ঘরের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে। ভেসে গেছে বিভিন্ন এলাকার পুকুর ও মাছের ঘের। যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া দপ্তর জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যশোরে প্রায় ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একদিনের বৃষ্টিপাতের হিসেবে যা গত কয়েক মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ।
খুলনায় ভারী বর্ষণ ঘরচাপায় একশিশু নিহত
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনার দাকোপে বিরামহীন ভারী বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় ঘর চাপা পড়ে একশিশু মারা গেছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে ব্যাপকহারে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হযেছে। আমন রোপন মৌসুমে বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত। উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নসহ বিভিন্নস্থানে বেড়িবাঁধে ধসে জনপদ প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
খুলনায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে ভারী বৃষ্টিপাত গতকাল বুধবার অব্যাহত থাকে। মঙ্গলবার রাতে বয়ে যায় ঝড়ো হাওয়া। দাকোপ উপজেলা প্রশাসনের ভাষ্যমতে উপজেলায় দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ এক শিশু মারা যায়। জানা যায় মাঝরাতের প্রবল ঝড়ে উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়নের খুটাখালী এলাকার জয়দেব মৃধার ঘরের উপর গাছ উপড়ে পড়ে। এ ঘটনায় ঘর চাপা পড়ে তার শিশু কন্যা টুশি মৃধা (৮) নিহত হয়।
সুতারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির জানান, মঙ্গলবার রাতে সুতারখালী মল্লিকবাড়ী এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। তাৎক্ষণিক স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকাবাসী কোনোমতে পানি আটকাতে সক্ষম হয়। তবে এখন আশঙ্কামুক্ত নয়। একই অবস্থা ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র নলিয়ান বাজার, নলিয়ান ফরেস্ট ও র‌্যাব কার্যালয়সংলগ্ন এলাকা এবং কালাবগী বৃহস্পতি বাজার এলাকার বেড়িবাঁধ। যে কোনো মুহূর্তে ওই রাস্তাগুলোর অবশিষ্ট অংশ নদীগর্ভে বিলীন হলে ফের আইলার মতো পরিস্থিতির আশঙ্কা হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৃণাল কান্তি দে জানান, সুতারখালীর মততিলডাঙ্গা, কামারখোলা, বানিশান্তা এবং পানখালী ইউনিয়নের অসংখ্য জায়গার বাঁধ হুমকির মুখে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন