ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলেরর কুর্দি অধ্যুষিত এলাকার দুটি শহরে দুটি বোমা বিস্ফোরণে নয় বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছে। একই দিন ইরাক সীমান্ত থেকে চালানো রকেট ও কামানের গোলাবর্ষণে নিহত হয় চার সেনা। গত বুধবারের এসব হামলার ঘটনায় আরো অন্ততপক্ষে ৬১ জন আহত হয়েছেন। এসব হামলার জন্য কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে (পিকেকে) দায়ী করেছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ।
গত বুধবার সকালে সীমান্তের ওপারে ইরাকি এলাকা থেকে বিদ্রোহীদের ছোঁড়া রকেট ও কামানের গোলায় চার সেনা নিহত ও নয় সেনা আহত হন। সিরনাক প্রদেশে চালানো এই হামলার জন্য পিকেকে’কে দায়ী করেছে তুর্কি নিরাপত্তা বাহিনী। মারদিন প্রদেশে সিরীয় সীমান্তবর্তী কিজিলতেপি শহরে একটি হাসপাতালের কাছে চালানো দূর-নিয়ন্ত্রিত বোমার বিস্ফোরণে চার বেসামরিক নিহত হন। একটি পুলিশ বাসকে লক্ষ্য করে রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। এতে আরো ৩০ বেসামরিক ও ১০ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম শহর দিয়ারবাকিরে চালানো একটি গাড়িবোমা হামলায় আরো পাঁচ বেসামরিক নিহত হন। সূত্রগুলো জানিয়েছে, সম্ভবত পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়েছিল। টাইগ্রিস নদীর একটি সেতুতে পুলিশের তল্লাশি চৌকির কাছে চালানো এ হামলায় পাঁচ পুলিশ ও সাত বেসামরিক আহত হন। তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কুর্দি অধ্যুষিত এলাকাগুলোর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আঙ্কারা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে পিকেকে-র গেরিলারা।
এদিকে, দুপক্ষের মধ্যে একটি অস্ত্রবিরতি চললেও গেল বছর তা ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে দুপক্ষের মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। গেল মাসের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের ধকল কাটিয়ে উঠার চেষ্টারত তুরস্ক ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সন্ত্রাসী হামলারও মোকাবেলা করছে। গেল বছর থেকে পিকেকে আড়াই বছরের অস্ত্রবিরতি ত্যাগ করার পর দুই দশকের মধ্যে তুরস্কের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলো হচ্ছে। পিকেকে-কে তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র জিহাদি গোষ্ঠী বলে বিবেচনা করে। গোষ্ঠীটি ১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সহিংসতায় ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন যাদের বেশিরভাগই কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর। উল্লেখ্য, ১৫ জুলাইয়ের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে ২৪০ জন নিহত ও দুই হাজার ২০০ জন আহত হন। এর জেরে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার লোককে আটক, বরখাস্ত বা তদন্তের অধীনে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য। রয়টার্স, আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন