বিশ্বজুড়ে কারোনাভাইরাসের সংক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছে। মানবদেহে ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হলেও বাজারে ছাড়া হয়নি। আর কবে নাগাদ সেই প্রতিষেধক আসবে তা নিয়ে এখনো পরিস্কার কোনো ধারণা কেউই দিতে পারছে না।
কোন দেশ আগে বের করবে করোনার ভ্যাকসিন সেই দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে রয়েছে পৃথিবীর প্রায় সব মানুষ। প্রতিদিন টিভি ও সংবাদপত্রে চোখ রাখছেন লোকজন। এমন পরিস্থিতিতে ফের করোনা নিয়ে নতুন করে আতঙ্কের কথা শোনালেন ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী।
সম্প্রতি নিউইয়র্কের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি জার্নালে ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন যে, বাতাসে ভেসে বেড়ানো ক্ষুদ্র কণা থেকেও করোনার সংক্রমণ ঘটতে পারে। আর তা একজনের দেহ থেকে একাধিক মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, ঘরের এককোণে বসে থাকলেও একজন করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির নাক-মুখ থেকে বের হওয়া বাতাস আরও দশ জনকে সংক্রমিত করতে সক্ষম। এছাড়াও বন্ধ ঘর বা যেখানে বাতাস চলাচলের অসুবিধা রয়েছে সেই স্থানে দাঁড়িয়ে অথবা বসে কেউ হাঁচি-কাশি দিলে, গান বা চিৎকার করলেও একজনের থেকে অপরজনের শরীরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়।
করোনাকে দূরে রাখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যে অত্যন্ত জরুরি তা মহামারী শুরুর প্রথম দিন থেকেই বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাকে দূরে রাখতে ২ মিটারের সামাজিক দূরত্ব যথেষ্ট নয়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাতাস বাহিত কোনও জীবাণুুর বৃহত্তর কণা খুব বেশি সময় বাতাসে ভেসে থাকতে পারে না। কিছু সময় পরই তা মাটিতে পড়ে যায়। এগুলো একটি উইন্ডো ক্লিনারের স্প্র্রিটজে ফোঁটার মতো। এরা নাক, মুখ বা চোখের উপর থাকে বা শ্বাসকষ্টের কারণে কাউকে সংক্রামিতও করতে পারে।
তবে কিছু বিজ্ঞানীরা এখন ক্ষুদ্র কণার উপর দৃষ্টিপাত করছেন। এগুলো সিগারেটের ধোঁয়ার মতো বাতাসের মাধ্যমে আরও ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো আমাদের দেহের উষ্ণতা দ্বারা সৃষ্ট বাতাস এবং এমনকি ঊর্ধ্বমুখী বাতাস দ্বারাও বাহিত হয়। এগুলো কয়েক ঘণ্টার জন্য বাতাসে স্থির থাকতে পারে। একটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেই ঘরে বাতাস চলাচল কম হলে এর সংক্রমণ ছড়ানোর গতি বাড়তে পারে।
সম্প্রতি অ্যারোসোল সম্পর্কিত এক বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড. জর্জেস বেনিয়ামিন জানিয়েছেন, গোটা বিশ্বে যতদিন না করোনার কোনও টিকা বের হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত মানতে হবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় সতর্কতা বিধি। মেনে চলতে হবে সরকারি গাইডলাইন। তাহলেও যদি কিছুটা রোধ করা যেতে পারে মারণ ব্যাধির দাপট। সূত্র : হিন্দুস্থান টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন