স্টাফ রিপোর্টার : উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফেরাতে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায় ঘোষণার প্রায় তিন মাস পর সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে আসা রায় প্রকাশ পেল। গতকাল বৃহস্পতিবার তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ ১৬৫ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশ করা হয়। চলতি বছরের ৫ মে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। তাঁদের মধ্যে দুজন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের লেখা রায় প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু বেঞ্চের অপর বিচারপতি আশরাফুল কামালের লেখা রায় ওয়েবসাইটে এখনো প্রকাশিত হয়নি। রায় প্রকাশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এটাকে পূর্ণাঙ্গ রায় বলা যাবে না। আমি যতটুকু জানি, তিনজন বিচারপতির মধ্যে দুজন বিচারপতির লেখা রায় প্রকাশিত হয়েছে। বাকি একজনের এখনো হয়নি। তাই এটাকে পূর্ণাঙ্গ রায় বলা যাবে না। পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি হাতে পেলে অবশ্যই এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।
রায়ে বলা হয়েছে, বলতে দ্বিধা নেই, ষোড়শ সংশোধনী একটি কালারেবল লেজিসলেশন যা রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নীতির লঙ্ঘন। এটা সংবিধানের দুটি মূল কাঠামো ৯৪(৪) ও ১৪৭(২) অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন। একইসঙ্গে সংবিধানের ৭(বি) অনুচ্ছেদকেও আঘাত করে।
২০১৪ সালে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী গত মে মাসে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণার রায়ের পর তা রাজনৈতিক অঙ্গনেও উত্তাপ ছড়িয়েছিল।
উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে এই রিট আবেদন হয়। শুনানির পর হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল দেয়। রুলের উপর গত বছর ২১ মে শুনানি শুরু হয়। এ সময় অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসি নিজেদের মত তুলে ধরেন। রুলের শুনানি শেষে গত ১০ মার্চ আদালত ৫ মে রায়ের দিন ঠিক করে দেয়। রায় ঘোষণার প্রায় তিন মাস পর রায় প্রকাশ পায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন