জামালপুর জেলা সংবাদদাতা : ভারতের আসাম রাজ্য থেকে কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্ত দিয়ে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী পথে বন্যার পানিতে ভেসে আসা হাতিটি গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে গভীর পানিতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়লে দর্শনার্থীরা টেনে তুলেন। এতে অল্পের জন্য নিশ্চিত মৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা পেয়ে হাতিটি সরিষাবাড়ী উপজেলার কয়রা গ্রামে আম গাছের সাথে বাঁধা পড়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাতিটি সরিষাবাড়ী পৌর সভার ধানাটা, ইস্পাহানী এবং কামরাবাদ ইউনিয়নের স্বাধীনাবাড়ি, সোনাকান্দর, নিউটিংগর ও কয়রা এলাকায় ছুটাছুটি করেছে। ওইদিন সকাল ৬টায় হাতিটি কামরাবাদ ইউনিয়নের সোয়াকৈর গ্রামের হরেকের বাড়ির সামনে দিয়ে ঝিনাই নদী পাড়ি দিয়ে নিউটেংগর গ্রামে যায়। এরপর হাতিটি কামরাবাদ ইউনিয়নের নিউটিংগর, স্বাধীনাবাড়ি, সোনাকান্দর ও কয়রা এলাকায় কয়েকদফা ছুটাছুটি করেছে। ওই সময় বণ্যপ্রাণী পরিদর্শক অসিম মল্লিকের সাথে ছয় সদস্যের একটি উদ্ধার দল হাতিটিকে ট্র্যাংকুলাইজার গান দিয়ে অচেতন করার জন্য অনুসরণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওইদিন দুপুরে হাতিটি আবারও সরিষাবাড়ী পৌরসভার ধানাটা গ্রামে পৌঁছে। সেখানে উদ্ধারকর্মীদের সাথে থাকা ঢাকা অঞ্চলের সাবেক বনকর্মকর্তা ড. তপন কুমার দে এবং ময়মনসিংহ বিভাগীয় বনকর্মকর্তা গোবিন্দ রায় এর নির্দেশে কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন দক্ষ শুটার ডা. মোস্তাফিজুর রহমান খুব কাছ থেকে ট্রাংকুলাইজার গান দিয়ে মেটালডার্টের শুট করে হাতির শরীরে অচেতন করার ওষুধ পুশ করেন। ওই সময় ট্রাংকুলাইজার গান এর আঘাতে হাতিটি দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে হাতিটি ধানাটা গ্রাম থেকে এক কিলোমিটার দূরে সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামের মনু মন্ডলের বাড়ির পাশের্^ কচুরিপানাযুক্ত গভীর পানিতে গিয়ে অচেতন হতে থাকে। এসময় উদ্ধারকারীরাসহ শত শত দর্শনার্থী মনু মন্ডলের বাড়ির পাশের্^ কচুরি পানার ধারে গিয়ে দেখেন হাতিটি ধীরে ধীরে গভীর পানিতে ডুবে যাচ্ছে। তখন অচেতন হাতিটিকে উদ্ধারের জন্য ঢাকা অঞ্চলের সাবেক বন কর্মকর্তা ড. তপন কুমার দে পানিতে নেমে পড়ে সকলের সহযোগিতা প্রার্থনা করেন। এসময় শত শত দর্শনার্থী পানিতে নেমে মোটা নাইলনের রশি দিয়ে হাতিটির পা, গলা ও শুঁড় বেঁধে টেনে প্রায় একশ’ মিটার দূরে ডাঙ্গায় তোলে। পরে উদ্ধারকারীরা হাতিটির চার পা বেঁধে ফেলে এবং দুইটি বৃহৎ আম গাছের সাথে আটকানোর পর অচেতন ইনজেকশন দিয়ে রাখা হয়। হাতিটির ডাক্তারি পরীক্ষা চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন