কূটনৈতিক সংবাদদাতা : প্রায় তিন মাস দেশে কাটিয়ে গতকাল শুক্রবার ভোরে ঢাকায় ফিরছেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত দেউরিম ওজতুর্ক। কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় তদন্তের জন্য দেশে ফিরতে বলা হলেও বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির তিন কূটনীতিক ঢাকা ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু।
প্রসঙ্গত, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ার পর দেউরিম ওজতুর্ককে আলোচনার জন্য দেশে নিয়ে যায় তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে আঙ্কারায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আল্লামা সিদ্দিকীকে আলোচনার জন্য সরকার ঢাকায় ফিরিয়ে আনে। গত বুধবার আঙ্কারায় ফিরে গেছেন আল্লামা সিদ্দিকী।
মূলত নিজামীর ফাঁসি নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ক্ষোভ প্রকাশ করায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে সাময়িক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। তবে তখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত নিজামীর ফাঁসির আগেই তার দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীও সে সময় বলেন, তুরস্ক যে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে এমন কোনো বিষয় দেশটি বাংলাদেশকে জানায়নি।
এদিকে তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা ছেড়েছেন দেশটির তিন কূটনীতিক। ওই তিনজনকে দেশে ফিরতে বলা হলেও গত মাসের শেষ দিকে দুজন নিউইয়র্কে এবং একজন মস্কোতে চলে যান।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তারা সম্প্রতি তুরস্কে যে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছিল তাতে সমর্থন জানিয়েছিল। এ কূটনীতিকদের নেতৃত্ব দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আহমেদ গুরবুজ। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুকের বরাত দিয়ে গত বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ জুলাইয়ের ব্যর্থ অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা দু’জন রাষ্ট্রদূতসহ তুরস্কের অন্তত ৩শ কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত তিনজনকে আমরা দেশে ফিরতে বলেছিলাম। কিন্তু তাদের দু’জন নিউইয়র্কে এবং অন্যজন জাপান হয়ে মস্কোতে পালিয়ে গেছেন। তুরস্কের এই তিন কূটনীতিক গতমাসের শেষ দিকে ঢাকা ছেড়েছেন। তিনি আরো বলেন, এসব বিশ্বাসঘাতকদের আমরা তুরস্কে ফিরিয়ে আনব। এর মধ্যে যারা দেশে ফিরতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান কাভুসোগলু।
এর আগে গত ২৮ জুলাই তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসকে এক চিঠিতে জানায়, মাহমুত বুরাককে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ঢাকায় তুরস্কের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ ওই সময় ওই পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন আহমেদ গুরবুজ। পরে ১ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তুরস্ক জানায়, দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আহমেদ গুরবুজ, তৃতীয় সচিব সেমিলেনুর গুরবুজ ও অ্যাটাশে পদের একজনসহ তিনজনের তুরস্কের কূটনীতিকের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন