সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দেশের প্রথম আট লেনের মহাসড়ক উদ্বোধন আজ

প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম আট লেন জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ। এই প্রকল্পটি ১৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। নতুন এই প্রকল্পের যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে যাতায়াত আরও সহজ হবে। অর্থাৎ এই এলাকা পাড়ি দিতে এখন আর যানজটের ভোগান্তি হবে না। পরিবহন মালিক-শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ যাত্রীরাও এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
মালিক সমিতি নেতৃবৃন্দ বলছেন, অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিভাগ সিলেট এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা-এই তিন অঞ্চলেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাড়বে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত নির্মিত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার। ৮ লেনের এ মহাসড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪ লেনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এটি দেশের অর্থনীতিতে সরাসরি অবদান রাখবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কটির পূর্ণ সুফল পেতে রাস্তার দু’ধারের অবৈধ পার্কিং ও দোকানপাট উচ্ছেদের পাশাপাশি বিভিন্ন মোড়ে উড়াল পথ বা ওভারপাস নির্মাণ করতে হবে। সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলসহ ঢাকার সঙ্গে ১৮ জেলার প্রবেশদ্বার; কাঁচপুর-যাত্রাবাড়ী মহাসড়ক। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি ৮ লেনে উন্নীতের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। প্রয়োজনের তাগিদে নির্মাণ কাজ চলার পাশাপাশি এটি ব্যবহৃত হচ্ছে শুরু থেকেই।
অর্থনীতির লাইফ লাইন বলা হয় যে ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪ লেনকে; তার সঙ্গে সমানতালে অবদান রাখবে এই নবনির্মিত ৮ লেন, এমন কথা কোনো পরিসংখ্যান না করেও বলাই যায়। কিন্তু ৮ লেনের পরও যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত বিভিন্ন মোড়ে এখনই পোহাতে হয় দীর্ঘ যানজট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৪, ৬ বা ৮ লেনের যেকোনো রাস্তাই উপকারী, তবে সেই উপকার শতভাগ পেতে মোড়গুলোকে যানজট মুক্ত রাখতে হবে। আর সে কারণে কাঁচপুর বা সাইনবোর্ডের মতো মোড়ে ওভারপাস বা ইন্টারচেঞ্জ করা না গেলে হয়ত এই ৮ লেনের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে।
সড়কটির নানা স্থানে এখনই বসেছে অবৈধ পার্কিং। উদ্বোধনকে সামনে রেখে বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব পার্কিং ও অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়। কর্তৃপক্ষের আশা, সড়কটি দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখবে।
সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর মহাসড়ক হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ও ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়কের প্রবেশ ও বহির্গমনের প্রধান করিডোর। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর থেকে যানবাহন দ্রুত যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর মহাসড়কে প্রবেশ করবে। এই বিবেচনায় ২০১১ সালে এ মহাসড়কের প্রবেশ ও বহির্গমন অংশে যানবাহনের চাপ সামাল দিতে চার লেনের মহাসড়কটি আট লেনে উন্নীত করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ইতোমধ্যে মহাসড়কটি আট লেনে উন্নীত হওয়ায় যানবাহন দ্রুত ও নির্বিঘেœ ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আসা-যাওয়া করতে পারছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি শেষ হবার কথা ছিলো ২০১৩ সালে। কিন্তু কয়েক দফা মেয়াদ ও ব্যয় বেড়ে এটির সব শেষ ব্যয় দাঁড়ায় ১৩২ কোটি টাকা। প্রকল্পের অংশ হিসেবে তৈরি হয়েছে ৪টি পায়ে হাঁটা উড়াল পথ।
পদ্মা সেতু লিংক রোড চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শেষ হলে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে আসা যানবাহন এ মহাসড়কে প্রবেশ করে সহজে ও স্বল্প সময়ে যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করতে পারবে।
হানিফ ফ্লাইওভার থেকে শিমরাইল ইন্টারসেকশন পর্যন্ত ৭ দশমিক ২০ কিলোমিটার মহাসড়কের বিদ্যমান ৪ লেন উন্নয়ন এবং নতুন ৪ লেন নির্মাণের মাধ্যমে মহাসড়কটি ৮ লেনে উন্নীত করা হয়েছে। সড়কে নিরাপদ যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে সেন্টার লাইন বরাবর নিউজার্সি ব্যারিয়ার নির্মাণ, কালভার্ট সম্প্রসারণ, মানুষের রাস্তা পারাপারের সুবিধার্থে চারটি ফুট ওভারব্রিজ ও প্রয়োজনীয়স্থানে ফুটপাথ এবং বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য আরসিসি ড্রেন ও সসার ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর জাতীয় মহাসড়ক অংশে যানজট ব্যাপক হ্রাস পাবে, এমন আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।
তবে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা অনেকেই বলছেন, ঢাকা থেকে হানিফ ফ্লাইওভার ও ৮ লেন প্রকল্প হয়ে গাড়িগুলোকে কাঁচপুর ব্রিজে গিয়ে যানজটের মুখে পড়তে হবে। এ বিষয়ে পরিবহন শ্রমিকনেতা দেলোয়ার হোসেন বলছেন, দুই লেনের ব্রিজ হওয়ায় একসঙ্গে এত গাড়ি চলার সুযোগ পাবে না। ফলে আট লেনের গাড়ি দুই লেন অতিক্রম করতে সময় লাগবে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, ব্রিজ পার হয়ে বামদিকে সিলেট ও ডানদিকে চট্টগ্রাম ক্রসিংয়েও যানজটে পড়তে হবে। কারণ, এই পয়েন্টে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় এমন আশঙ্কা তাদের। তাই কাঁচপুর সেতুর ঢালে অর্থাৎ চট্টগ্রাম ও সিলেট মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Tania ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৫৪ এএম says : 0
Thanks to PM
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন