বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ-এফডিআই আকৃষ্ট করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংস্কার করে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।
জাপানের রাষ্ট্রদূত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশকে আরও এফডিআই আকৃষ্ট করতে ও এর সম্ভাব্যতা পূরণে আমার পরামর্শ হলো, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নতিতে জোর দিতে হবে। বিশেষ করে কর, শুল্ক, মূলধন প্রবাহ যে সকল সংস্থাগুলো বাংলাদেশে ইতিমধ্যে কাজ করছে, তাদের ব্যবসায়ের পরিবেশ উন্নয়নে, সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলোর সুনির্দিষ্ট এবং প্রাথমিক সমাধান খুঁজতে আমি বিশেষ জোর দিতে চাই। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংস্কারে সরকার যত বেশি পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ বিনিয়োগের গন্তব্যস্থল হওয়ার ধারণাটি ততো বেশি প্রচারিত হবে।
এছাড়া করোনা মহামারি বাংলাদেশের জন্য নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, করোনা মহামারির পর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরবরাহ চেইনের দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছিল। সে কারণে এশিয়া জুড়ে পণ্য বৈচিত্র্যের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এটি বাংলাদেশের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনেক বিস্তৃত ক্ষেত্র রয়েছে। এসব ক্ষেত্রের মধ্যে তৈরি পোশাক, তথ্য-প্রযুক্তি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, আড়াইহাজারে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল জাপানের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে আরও আকর্ষণীয় গন্তব্য করে তুলতে পারে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রণোদনা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে একযোগে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নতি হলে আমার বিশ্বাস, আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চল এশিয়ার অন্যান্য অনেক অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে বিনিয়োগের প্রথম গন্তব্য হয়ে উঠবে। আর এ কারণে জাপানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আকর্ষণ করতে বাংলাদেশের একটি সুবিধা রয়েছে।
তিনি বলেন, জাপান-বাংলাদেশ পাবলিক-প্রাইভেট অর্থনৈতিক সংলাপসহ বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান হলে অবশ্যই জাপান থেকে এফডিআইয়ে উৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে জাপান-বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার হবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি আগে বলেছি, জাপানি সংস্থাগুলো যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, সেগুলো নিষ্পত্তি করা দরকার। একইসঙ্গে আমি কোভিড-১৯ পরবর্তী প্রস্তুতির গুরুত্বটি তুলে ধরতে চাই। আমি বুঝতে পারি বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মধ্যে এলডিসির স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণ হবে। সে কারণে নতুন বাণিজ্যিক ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। এছাড়া ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে পণ্য ও সেবার প্রবাহকে আরও ত্বরান্বিত এবং আঞ্চলিক সরবরাহ চেইনে একীভূত হওয়া প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ এবং জাপানের সঙ্গে আরসিইপি, এফটিএ/ইপিএ সমীক্ষা ও আলোচনা অগ্রগতির এখনই সবচেয়ে ভালো সময়। এই ধরনের অর্থনৈতিক কাঠামো ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে উৎসাহিত করবে। বাংলাদেশকে আরও বিকাশের জন্য উন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং বিনিয়োগের পরিবেশ বয়ে আনবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন