শেষ
মানুষের মধ্যে কেউ কেউ এমন যে, আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক-বিতর্ক করে অথচ তার না আছে জ্ঞান, না হিদায়াত, আর না আছে কোনো দীপ্তিদায়ক কিতাব। যে অহংকার নিজ পার্শ্বদেশ বাকিয়ে রাখে, যাতে অন্যদেরকেও আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারে। এরূপ ব্যক্তির জন্যই দুনিয়াতে রয়েছে লাঞ্ছনা এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে জ্বলন্ত আগুনের স্বাদ গ্রহণ করাব। (বলা হবে) এটা তোমার সেই কৃতকর্মের ফল, যা তুমি নিজ হাতে সামনে পাঠিয়েছিলে। আর এটা স্থিরকৃত বিষয় যে, আল্লাহ বান্দাদের প্রতি জুলুম করেন না।-সূরা হজ্ব : ৩-১০
এরচেয়ে বড় অন্যায় ও অকৃতজ্ঞতা কী হতে পারে যে, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহ তাআলার নেয়ামতে ডুবে থাকার পর আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কিছুকে রিযিকদানের যোগ্য মনে করা হবে? এর চেয়ে বড় অন্যায় কী হতে পারে যে, মানুষকে দেওয়া আল্লাহর নেয়ামতকে সম্বন্ধ করা হবে অসার নির্জীব প্রতিমার সাথে?! অথবা কিছু উদ্ভট কল্পনার সাথে, যার কোনোই বাস্তবতা নেই!?
ইরশাদ হয়েছে, তবে কে তিনি, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন? তারপর সে পানি দ্বারা আমি উদগত করেছি মনোরম উদ্যানরাজি। তার বৃক্ষরাজি উদগত করা তোমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। (তবুও কি তোমরা বলেছ) আল্লাহর সঙ্গে অন্য প্রভু আছে? (সূরা নামল : ৬০)। আরও ইরশাদ হয়েছে, বল তো, তোমরা জমিতে যা কিছু বোন, তা কি তোমরা উগদত কর, না আমি তার উদগতকারী?-সূরা ওয়াকিয়া : ৬৩-৬৪
আয়াতের শেষাংশে শোকরগোযারির নির্দেশনা : শুকরিয়ার উত্তম বিনিময়ের সুসংবাদ স্বয়ং আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন। শোকরগোযার বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলা খুশি হন। নেয়ামত আরো বাড়িয়ে দেন। শুকরিয়ার অন্যতম অংশ হল, আল্লাহর নেয়ামত স্বীকার করা। কথা ও কাজে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া এবং তাঁর দেওয়া নেয়ামতকে তাঁর অপছন্দনীয় কাজে ব্যবহার না করা। প্রকৃত সত্য হল, শুকরিয়াও আল্লাহ তাআলার নেয়ামত, যা আল্লাহ তাআলার তাওফীক ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
তাওহীদ, তাকওয়া ও শুকরিয়ার পর ইবরাহীম আ. আপন কওমের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন আখেরাতের দিকে। তিনি বোঝালেন, এ দুনিয়াতে কেউ থাকার জন্য আসেনি। দুদিন পর সবাইকে ফিরে যেতে হবে আল্লাহ তাআলার কাছে। মৃত্যুর পর আছে এক অনন্ত জীবন, যার শুরু আছে, কিন্তু শেষ নেই। সুতরাং সে জীবন কীভাবে সুন্দর হয় তা নিয়ে ফিকির করা উচিত। সেজন্য আমল করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
তাই তোমরা সকল প্রকার শিরক থেকে বেঁচে থাক। সকল ধরনের কোফরী কথা ও কাজ বর্জন কর। তোমরা তাওহীদ ও তাকওয়া নিয়ে সে অনন্ত জীবনের প্রস্তুতি গ্রহণ কর। যুগে যুগে নবী ও রাসূলগণ এভাবেই ডেকেছেন আপন কওমকে। দাওয়াত দিয়েছেন আল্লাহভোলা, আখেরাতবিস্মৃত মানুষকে আল্লাহ তাআলার দিকে। দাওয়াত দিয়েছেন তাওহীদ ও তাকওয়ার, রিসালাত ও আখেরাতের। এ আহবান আল্লাহর, এ আহবান কেয়ামত পর্যন্ত সকল বনী আদমের উদ্দেশ্যে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন