দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর কর্মসূচি পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আনা অত্যন্ত জরুরি। আগামী ১৩ অক্টোবর এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সুশাসন, নিশ্চিত করবে টেকসই উন্নয়ন। এই প্রেক্ষিতে, প্রায় সাড়ে তিনশ দেশি-বিদেশি সংস্থাসমূহের ভাস্যুয়াল অংশগ্রহণ ও বিশেষজ্ঞদের প্রত্যক্ষ গোলটেবিল আলোচনায় এই মতামত ব্যক্ত করা হয়।
গতকাল শনিবার আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসকে সামনে রেখে আয়োজন করা হয় গোল টেবিল আলোচনার।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের যৌথ উদ্যোগে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, সারা বিশ্বের কাছে দুর্যোগ মোকাবিলায় রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচিগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যা অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। দুর্যোগ মোকাবিলায় এনজিওদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বাস্তবমুখী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
রাজধানীতে একটি দৈনিকের আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব:) এবি তাজুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক, ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খান, ড. মাহবুবা নাসরিন, আহমদুল হক, ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র ডিরেক্টর কাজী এমদাদুল হক প্রমুখ।
বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণের ২০টি জেলা অতি দুর্যোগ প্রবণ। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরর সমন্বয় সম্পর্কিত সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আলোকে দেশের তৃণমূল সংস্থাগুলোকে তাদের কর্মএলাকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিস্থিতি, অগ্রগতি ও করণীয় সম্পর্কে বক্তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। ফ্রেমওয়ার্কের অ্যাকশন অনুসারে স্থানীয় ব্যবহারিক জ্ঞান এবং এর চর্চা নিশ্চিত করা এবং বিভিন্ন বিভাগীয় উন্নয়ন কার্যক্রম ও বাস্তবায়ন নীতি, কর্মকৌশল, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
বক্তারা জানান, গ্রামের মানুষ দুর্যোগের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর কৌশল রপ্ত করেছে। তাই পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতির দেশ হয়েও দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি আগের তুলনায় অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এভাবে ক্ষতি কমানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় একটি রোল মডেল। প্রতিবছর বাংলাদেশ এক বা একের অধিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে থাকে যেমন- বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন, জলাবদ্ধতা, ভারীবর্ষণ, শৈত্যপ্রবাহ ইত্যাদি। জনসাধারণ, স্থানীয় সরকার এবং সুশীল সমাজ এ সকল দুর্যোগের প্রাথমিক শিকার এবং জরুরি সাড়াদান ও দুর্যোগ কর্মসূচির সমন্বয়কারী। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি প্রতিনিধি এবং জনসাধারণের মধ্যে একটি সেতুরূপে কাজ করে। এসব প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা স্ব স্ব এলাকার তথ্য ও আদিজ্ঞান সমৃদ্ধ হয়ে থাকে যা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ঠিক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই স্থানীয় জনসাধারণের কথা ও মতামত শোনা প্রয়োজন। জাতিসংঘের সদস্য দেশ হিসেবে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসকে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে আসছে বাংলাদেশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন