প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর দেশের একমাত্র অনাবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তকমা ঘুচছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের। উদ্বোধনের অপেক্ষায় ক্যাম্পাসের বিপরীত পাশে ছাত্রীদের জন্য নবনির্মিত হল। ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল নামে ১৬ তলা বিশিষ্ট ১ হাজার আসনের বিশালাকার ভবনটির নির্মানকাজ প্রায় শেষ। বিগত ৮ বছর ধরে নির্মানাধীন ভবনটি সকল কাজ শেষে এখন ছাত্রীদের থাকার উপযোগী বলে জানিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ক্যাম্পাস খুললেই হলে ছাত্রী উঠানো ও আসন বিতরন শুরু হবে এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী আসন বরাদ্ধ হবে জানিয়েছেন প্রভোষ্ট ড. এস এম আনোয়ারা বেগম।
চলতি মাসের ২০ তারিখ ১৫ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে হলটি উদ্বোধনের কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওইদিন সকাল সাড়ে দশটায় যথাযথ স্বাস্থবিধি মেনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশনা এবং বেলুন উড়িয়ে হলটির উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। তবে উদ্বোধকের জায়গায় জবি ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের নাম লেখায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাতার নামানুসারে হলটির নামকরন করা হলেও প্রধানমন্ত্রীকে কেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে রাখা হয়নি এমন প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই লিখেছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম হল বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেসার নামে। করোনাকালীন অনাড়ম্বরভাবে হলেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা উদ্বোধন হলে জবি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি পাওয়া হত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিকভাবে চাইলেই তা সম্ভব। জবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম হল এবং তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাতার নামে তাই প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমেই তা উদ্বোধন করা উচিৎ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিকায়নে প্রধানমন্ত্রীর অবদান সর্বাধিক। এছাড়া এখন পর্যন্ত জবির কোন ফলকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম নেই। তাই তার মাধ্যমে হলের উদ্বোধন করে তাকে কৃতজ্ঞতা জানানো উচিৎ।’ কয়েকজন শিক্ষার্থী লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হলে অবশ্যই তিনি হলটি নিজে উদ্বোধন করবেন। কোন কারণে অপারগ হলে কমপক্ষে শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যমে উদ্বোধন করা হোক। এতে করে আমাদের অন্যান্য সমস্যাও সরকারের নজরে আনা সম্ভব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে কথা বলতে চাইলে হলের প্রভোস্ট ড. এস এম আনোয়ারা বেগম কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে হলের উদ্বোধক হিসেবে রাখা যেত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, “হল উদ্বোধন কে করবে না করবে সেটা তো বিজ্ঞপ্তিতেই বলে দেওয়া হয়েছে। সেটাই ফাইনাল। এ নিয়ে কে কি লিখছে (বলছে) তাতে আমার কিছু যায় আসেনা, সেটা তাদের বিষয়।”
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর হলটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর পরের বছর ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর ৯ম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এটির নির্মাণকাজের শুভ সূচনা করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের তৎকালীন চেয়্যারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ড. এ. কে. আজাদ চৌধুরী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন