হায়েনার সঙ্গে হরিণের ঐক্য হতে পারে না
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির জাতীয় ঐক্য প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দল। জঙ্গিচক্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক, পাকিস্তান-প্রীতি, মানুষ হত্যা ও ঐক্যের নামে সন্ত্রাসবাদ উসকে দেয়ার আশঙ্কায় দলটির সঙ্গে কোনো ঐক্য নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন জোটটির নেতারা। বিএনপিকে শিকারী ও আর জাতীয় ঐক্যকে শিকার মন্তব্য করে নেতারা বলেন, তাই এই কুচক্রি মহল (বিএনপি)টির সঙ্গে কোনো ঐক্য নয়। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে যে ঐক্যের দরকার তা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের জনগণের সঙ্গে ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে বলেও নেতারা দাবি করেন।
গতকাল শনিবার বিকালে ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত নেতারা এসব কথা বলেন। ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, দলটির সভাপতিম-লির সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসরকারিী বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের একাংশের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাম্যবাদী দলের দিলিপ বড়ুয়া, জাসদের আরেক অংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হারুনর রশিদ, আওয়ামী লীগ নেতা বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক ভোলা, ১৪ দলের নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম, এ্যাড. এনামুল হক, ডা. অসিত বরণ রায়, শাহাদত হোসেন, শাহে আলম মুরাদ, সাদেক খান, মোল্লা আবু কাওছার প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, দেশের যে অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তার বিরুদ্ধে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের মানুষ যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিল তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তারা নতুন করে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, যারা আন্দোলনের নামে দেশের মানুষ হত্যা করে, জ্বালাও পোড়াও করে, দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে চায় তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য নয়। তিনি বলেন, ২০০৫ সালে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করে সারাদেশে সিরিজ বোমা মেরেছিল। তারাই আবার ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের মানুষ হত্যা করে জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। এরা (বিএনপি) গুলশানের আর্টিজান হামলা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, জঙ্গিরা আসলেই জঙ্গি কিনা প্রশ্ন তোলে। এদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য হয় কিভাবে? দেশের মানুষ আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
মতিয়া চৌধুরী বক্তব্যে বলেন, হরিণের সঙ্গে হায়েনার যেমন ঐক্য হয় না তেমনি বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঐক্য হতে পারে না। তিনি বলেন, ঐক্য হতে হবে দেশের জন্য, শান্তির জন্য। সেই স্বার্থে দেশের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মতিয়া বলেন, বিএনপি বেকায়দায় পড়ে ঐক্যের বিলাপ করছে। কিন্তু এতে লাভ নেই। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যের কাজ করে যাচ্ছি।
রাশেদ খান মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশকে উন্নয়নের সোপানে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা দেশের সে অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়। আর যেন কোনো ১৫ আগস্ট না ঘটে সেদিকে সতর্ক থাকতে দেশবাসী প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আমরা এখন যুদ্ধের মধ্যে আছি জানিয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, এ যুদ্ধ অন্যায়ের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ন্যায়ের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর প্রেরণায় ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের জিততে হবে।
আমরা ন্যায়ের পক্ষে আছি-জানিয়ে ইনু বলেন, বিএনপি-রাজাকাররা আমাদের ওপর অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে। এদের সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই, দেশীয় সংস্কৃতির কোনো কোনো সম্পর্ক নেই। এরা দেশটাকে জবর দখল করতে চায়। জঙ্গিবাদ চক্রের কেয়ারটেকারও বিএনপি। এদের প্রতিহত করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে মূর্খ আখ্যায়িত করে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, উনি উচ্চশিক্ষিত হয়েও মূর্খের মতো কথা বলছেন। গণতন্ত্র না থাকায় যদি জঙ্গি হামলা হয়ে থাকে তাহলে কি আমেরিকায় গণতন্ত্র নেই? ফ্রান্স, জার্মান, ইংল্যান্ডেও জঙ্গিরা হামলা করছে। সেখানে কি তাহলে গণতন্ত্র নেই? তাহলে আপনারা কোন গণতন্ত্রের কথা বলছেন?
বাংলাদেশের সকল অর্জন আওয়ামী লীগের উল্লেখ করে হানিফ বলেন, তাই এদেশের মানুষ আজ দেশের সার্থে, দেশের উন্নয়নের সার্থে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন