বিশেষ সংবাদদাতা : রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশের ক্ষতি করবে না, সরকার ভাড়া করা বিশেষজ্ঞ দিয়ে এটা জায়েজ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
এই বিশেষজ্ঞরা কোথায় কাজ করেন, কোন বিষয়ে বিশেষভাবে পারদর্শী অনেক ক্ষেত্রে সেগুলো স্পষ্ট করা হচ্ছে না। শুধু বলা হচ্ছে বিশেষজ্ঞ। গতকাল (শনিবার) রাজধানীর পল্টনে মুক্তি ভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে সরকার-কোম্পানির মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তির জবাবে আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিযোগ করেন।
অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, গ্যাস আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে যে খরচ হতো কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন তার চেয়ে বেশি খরচ হবে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবে। তিনি বলেন, সারাদেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ ও বিদেশী বিশেষজ্ঞসহ সকলেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করছে। অন্যদিকে সরকার কারও কাছে ঠাঁই না পেয়ে ভাড়া করা বিশেষজ্ঞ দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ আরও বলেন, সরকার যখন বৈজ্ঞানিক প্রমাণাদির কাছে পরাজিত হচ্ছে তখন বলছেন আমাদের উপর ভরসা রাখুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে দেশের এতো বড় ক্ষতি হতে পারে না। ক্ষতি হলে তিনি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতেন না। তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, সুন্দরবনের উপর বছরে লাখ টন কয়লা পোড়ানো হবে। ৮ লাখ টন বিষাক্ত ছাইসহ নানা বিষাক্ত দ্রব্য তৈরি হবে। পানি, বায়ু ও মাটি দূষণ খাদ্যচক্র ও জীবনচক্রকে বিপর্যস্ত করবে।
সভায় অন্যান্য আলোচকবৃন্দ বলেন, এগুলো চলতে দিলে সুন্দরবন বিনাশ হবে এবং পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ জীবিকা হারাবেন। ক্রমে উদ্বাস্তÍু হবেন আরও অনেক মানুষ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের জীবন ও সম্পদ সম্পূর্ণ অরক্ষিত হয়ে পড়বে।
সভা শেষে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ২০ আগস্ট (শনিবার) সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি।
একই সঙ্গে দেশের সর্বত্র শহীদ মিনারসহ হাটে মাঠে ঘাটে অবস্থান কর্মসূচি। ২৬ আগস্ট সকাল ৮টায় ফুলবাড়ী শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন, সমাবেশ ও আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের শিক্ষক ড. তানজিম উদ্দিন খান, মাহা মির্জা, প্রকৌশলী মাহবুব সুমন, প্রকৌশলী কমল মোস্তফা প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন