পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা:) কে পৃথিবীতে প্রেরণ ও তাঁর নাবুওয়্যাতকে বিশ্বময় পরিব্যক্তকরণ ছিল আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের অনুপম কুদরত ও অনন্ত হেকমতের একান্ত বিকাশ। যার ফলে তিনি সমগ্র জগতের জন্য নবী। তিনি যেমন সব উম্মতের নবী, তেমনি তিনি সব নবীদেরও নবী। এতদপ্রসঙ্গে মহান আল্লাহপাক আল কোরআনে এরশাদ করেছেন : আমি আপনাকে সব মানুষের জন্য সুসংবাদ দানকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। (সুরা সাবা : আয়াত ২৮)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন : আল্লাহপাক সাইয়্যেদুল মুরসালীন হজরত মোহম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা:) কে আকাশের অধিবাসী ও নবীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। (শরহু ফিকহে আকবার : পৃষ্ঠা ১১৪)। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : নিশ্চয়ই আল্লাহপাক আমাকে নবীগণের ওপর মর্যাদা দান করেছেন। (জামে তিরমিজি, সুনানে দারেমী)। হজরত আনাস (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : আমি কেয়ামতের দিন আদম সন্তানদের পুরোধা বা অভিভাবক হব। এটা আল্লাহর দান। এতে আমার গৌরবের কিছু নেই। (সহিহ মুসলিম, জামে তিরমিজি)। হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : আমার হাতে থাকবে আল্লাহপাকের প্রশংসা ও স্তুতির ঝান্ডা। হজরত আদম (আ:) ও অন্যান্য নবীগণ সেদিন আমার ঝান্ডাতলে সমবেত হবেন। আমার কবরের মাটি সর্বপ্রথম বিদীর্ণ হবে। আর আমিই হব প্রথম সুপারিশকারী এবং আমারই সুপারিশ প্রথম গ্রহণ করা হবে। (জামে তিরমিজি, মুসনাদে আহমাদ, সুনানে ইবনে মাজাহ)।
বস্তুত : নাবুওয়্যাত ও রিসালাত উপার্জনযোগ্য বস্তু নয় যে, উপাসনা আরাধনার ফল হিসেবে কেউ তা লাভ করতে পারবে বরং এটা একমাত্র আল্লাহপাকের দান ও তাঁর নির্বাচন। যাকে ইচ্ছা তিনি নাবুওয়্যাত ও রিসালাতের ভুষণে বিভূষিত করেন। ব্যক্তিগত চেষ্টা-সাধনা ইবাদত বন্দেগির এখানে কোনোই প্রভাব নেই। এ বিষয়ে মহান আল্লাহপাক আল কোরআনে ইরশাদ করেছেন : আল্লাহ তায়ালা স্বীয় বিশেষ রহমতে (নাবুওয়্যাত ও রিসালাত) যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহপাক মহান অনুগ্রহশীল। (সুরা বাকারাহ : আয়াত ১০৫)। অপর এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে : কিন্তু মহান আল্লাহপাক রাসুলগণের মধ্যে হতে যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন। (সুরা আলে ইমরান : আয়াত ১৭৯) মোট কথা, নাবুওয়্যাত ও রিসালাত আল্লাহপাকের বিশেষ অনুগ্রহ, করুণাও দান। যাকে ইচ্ছা তিনি দান করেন ও নাবুওয়্যাত ও রিসালাতের সম্মানে সম্মানিত ও মর্যাদাবান করেন। সুতরাং কেউ স্বীয় এলেম, যোগ্যতা ও উপার্জনের দ্বারা এ পদমর্যাদা লাভ করতে পারে না। যে ব্যক্তি নাবুওয়্যাত ও রিসালাতকে উপার্জনযোগ্য ও সাধনা দ্বারা লভ্য বলে বিশ্বাস করে, সে প্রকৃতই সিন্দিক ও ইসলাম থেকে বিচ্যুত। (শারহু আকীদায়ে সিফারানিয়্যাহ : খন্ড- ২, পৃষ্ঠা ২৬৮)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন