দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা নিবেদন : শুক্রবার দোয়া
স্টাফ রিপোর্টার : দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মরহুম ফজলুর রহমান পটলকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল সকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাযার পর সাড়ে ১১টায় দাফনের জন্য মরহুমের কফিন বেসরকারি হেলিকপ্টারে করে নাটোরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দুপুরে পটলের গ্রামের বাড়ী গৌরীপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সর্বশেষ জানাযা হয়। এরপর সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে ফজলুর রহমান পটলকে দাফন করা হয়।
এদিকে সকাল ১০টায় নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফজলুর রহমান পটলের কফিন এসে পৌঁছালে প্রথমে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দলীয় পতাকা দিয়ে কফিনটি ঢেকে দেন। এরপর কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তারা।
সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল্লাহ আল নোমান, আমিনুল হক, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, মিজানুর রহমান মিনু, গোলাম আকবর খন্দকার, আসাদুজ্জামান রিপন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, জাগপা’র শফিউল আলম প্রধান, খোন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা জানানোর আগে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মরহুমের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মহাসচিব, সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিএনপির কয়েকশ’ নেতা-কর্মী অংশ নেন।
সকাল ১০টার আগেই শাহবাগের বারডেম হিমঘর থেকে ফজলুর রহমানের কফিন অ্যাম্বুলেন্সে করে দলের কার্যালয়ের সামনে কালো কাপড় দিয়ে তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার রবীন্দ্রসদন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ফজলুর রহমান পটল। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
কলকাতা থেকে শনিবার সন্ধ্যায় লাশ ঢাকায় আসে। রাতে মরহুমের রামপুরার বনশ্রীর বাসার লাশ নেয়া হয়। বাদ এশা বনশ্রী জামে মসজিদে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। রাত ১১টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মরহুমের বাসায় গিয়ে মরহুম নেতার কফিনে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে মরহুমের কফিন বারডেম হিমঘরে নিয়ে যাওয়া হয়।
নয়া পল্টনের পর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, শামসুল হক টুকু, সাবেক বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ জাতীয় সংসদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
নাটোরে দাফন সম্পন্ন
আমাদের নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল ফজলুর রহমান পটলের জানাযা নাটোরের বাগাতিপাড়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে একটি বেসরকারী হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে মরহুমের লাশ বাগাতিপাড়ায় নিয়ে আসা হয়। এসময় দলীয় নেতা-কর্মীসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষ তাদের প্রিয় নেতার লাশ এক নজর দেখতে সমবেত হন। জানাযায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক, উপজেলা সভাপতি ও পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার রহমান, জামায়াতের আমির মোস্তাফিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম টিটুসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। পরে লাশ গাড়িতে করে তার নিজ বাড়ি লালপুরের গৌরিপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলে স্থানীয় লালপুর স্কুল মাঠে সব শেষ জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
চারদলীয় জোট সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী পটল বিএনপির গত ও নতুন কমিটিতে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলে স্থান পান।
ছাত্রলীগ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ভিপি হয়েছিলেন পটল। পরে বিএনপিতে যোগ দিয়ে নাটোর-১ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। পটলের বাড়ি লালপুর উপজেলার গৌরিপুর গ্রামে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী কামরুন্নাহার পটল, দুই মেয়ে ফারহানা শারমীন ও ফারজানা শারমীন এবং দুই ছেলে ইয়াসীর আরশাদ ও ইফতেখার আরশাদকে রেখে গেছেন।
শুক্রবার দোয়া মাহফিল
আগামী শুক্রবার রামপুরার বনশ্রীর বাসায় বাদ আসর মরহুম ফজলুর রহমান পটলের স্মরণে দোয়া মাহফিল হবে বলে জানান তার ছোট ছেলে ইফতেখার আরশাদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন