স্টাফ রিপোর্টার : নিজেদের তৈরী করা অ্যাপস ‘ম্যাজিক কল’ ও ‘ম্যাজিক এসএমএস’ ব্যবহার করে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ফল পাল্টে দেয়ার কথা বলে প্রতারণাকারী জালিয়াত চক্রের পাঁচ সদস্যকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল শাহবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গত শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আল রাবীত শুভ, রিয়াজ ভূঁইয়া, মেহেদী হাসান, নজরুল ইসলাম রাজু ও আসাদুজ্জামান গালিব। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে জালিয়াতি কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও বিভিন্ন রকম সফটওয়্যার জব্দ করা হয়। গতকাল রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন এসব তথ্য জানান।
এই জালিয়াত চক্রটির প্রায় এক হাজার সদস্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কাজ করে বলে জানান আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, তাঁরা তিন ধরনের জালিয়াতি করে থাকে। বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে জালিয়াতি চক্র সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করে। গ্রেপ্তারকৃতরা রাজু ও আসাদুজ্জামান ম্যাজিক কল নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন। এ ছাড়া কিং সফটওয়্যার ও একাত্তর আইটি নামে দুটি প্রতিষ্ঠানও জালিয়াতি করার মতো সফটওয়্যার তৈরি করে জালিয়াত সদস্যদের হাতে ছড়িয়ে দিতেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, জালিয়াত চক্রের কিছু সদস্য প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গেও জড়িত। তারা ভুয়া প্রশ্নপত্র দেখিয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় যাদের প্রত্যাশিত ফল হতো না, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাক্সিক্ষত ফল এনে দেয়ার কথা বলেও জালিয়াতি করা হতো। সেই সঙ্গে বিভিন্ন তদবির করার জন্য বোর্ড চেয়ারম্যান, সচিব, আইজিপিসহ ভিআইপি ব্যক্তির মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ফোন দিয়ে জালিয়াতি করত এই চক্র। প্রতারক চক্রের প্রতারণার ধরন সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবদুল বাতেন জানান, তারা পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়। পরীক্ষার ফল পরিবর্তন করার কথা বলেও টাকা নেয়। ১৬২২২ নম্বরে ম্যাসেজ পাঠাতে বলে। পরে ছাত্রছাত্রীরা ওই নম্বরে ম্যাসেজ পাঠালে পুনরায় ওই নম্বর থেকে ম্যাসেজ পাঠিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে।
গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশোধন আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় রিমান্ড চেয়ে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান আবদুল বাতেন।
সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম, উপকমিশনার (দক্ষিণ) মাশরুকুর রহমান খালেদ, উপকমিশনার (পশ্চিম) সাজ্জাদুর রহমান, উপকমিশনার (পূর্ব) খন্দকার নুরুন্নবী ও উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন