আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে কাজ করছে সমবায় অধিদপ্তর
কর্পোরেট রিপোর্টার : দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে চলেছে সমবায় অধিদপ্তর। নানান প্রতিক‚লতা ঢিঙিয়ে এগিয়ে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি। সমবায়ে উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনেও এটি কাজ করে যাচ্ছে। যেভাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই পরিপ্রেক্ষিতে গণমুখী সমবায় আন্দোলনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে হবে’’- সে মতেই কাজ করে যাচ্ছে সমবায় অধিদপ্তর। সাম্প্রতিককালে সমবায় সমিতিগুলো নানাবিধ সমস্যার কারণে টেকসই হতে পারছে না। সমবায় সর্ম্পকে প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানের অভাব, নিবন্ধনের জটিলতা, বিদ্যমান আইনের দুর্বলতা, সঠিক বিনিয়োগের অভাব, উৎপাদনমুখী বাজার অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়া এবং পণ্যের বাজারজাতকরণের অভাব এর অন্যতম কারণ। সমবায় অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, এ সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কাজ করে যাচ্ছে সমবায় অধিদপ্তর। তারা বলেন, উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি গঠনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সমবায় অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, সমবায় সমিতিকে টেকসই করার জন্য উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি গঠন এবং বিদ্যমান সমবায় সমিতিগুলোকে উৎপাদনমুখী কার্যক্রমে সম্পৃক্তকরণের কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, উদ্ভাবনকে যুক্ত করে উৎপাদমুখী ও লাভজনক টেকসই সমবায় সমিতি গঠনের ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। যা আগামীতে বাংলাদেশের সমবায়কে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে সমবায় বিপ্লব সাধনে সমবায় সমিতিকে টেকসই করার লক্ষ্যে সমিতির সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। করা হয়েছে নিবন্ধন সহজীকরণ ব্যবস্থা। এতে সমবায় উদ্যোক্তাদের ভোগান্তি অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। ফলে সমবায় সংশ্লিষ্টদের আর্থিক, যাতায়াত এবং সময় অপচয় রোধ হয়েছে। নিশ্চিত হয়েছে গুণগত সেবা। ইতোমধ্যে সমবায় অধিদপ্তর টেকসই সমিতি গঠনে সমবায় পণ্য বাজারজাতকরণে সমবায় সমিতিগুলোকে সহযোগিতার লক্ষ্যে স্থাপন করেছে বিক্রয় কেন্দ্র। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সমবায় পণ্য পরিদর্শন করেন। যেখানে সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপিও উপস্থিত ছিলেন। সম্প্রতি সমবায়ী গোলাপ বানু, বারিধারা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি হিসেবে অসামান্য ভ‚মিকা রাখার জন্য বেগম রোকেয়া পদক অর্জন করেন। যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে হস্তান্তর করেন। তাছাড়া সমবায়ে উদ্ভাবনী উদ্যোগের ফলস্বরূপ সম্প্রতি সোস্যাল মিডিয়া ইনোভেশন এওয়ার্ড জুন ২০১৬-এর আওতায় বেস্ট ইনোবেশন পলিসি সাপোর্ট ক্যাটাগরিতে সমবায় অধিদপ্তর স্বীকৃতি অর্জন করে। ই-কমার্সের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে পণ্য বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে সমবায়ীরা উৎপাদিত পণ্য অধিকভাবে বাজারজাত করতে পারবেন। তারা পাবে ন্যায্যমূল্য। আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্জন করবে উন্নতর জীবনযাপনের সক্ষমতা। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কয়েকটি সমবায় সমিতি নিজস্ব উদ্যোগে ই-কমার্সের আওতায় সমবায় পণ্য বাজারজাত শুরু করেছে। ই-কমার্সের মাধ্যমে সমবায় পণ্য যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও কোরিয়ায় বিপণন করেছে। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ‘কৃষ্টি কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপিও উপস্থিত ছিলেন। সম্প্রতি ই-কমার্সের আওতায় নীলফামারী সদর উপজেলার ‘সৃষ্টি মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেডের একটি ওয়েবসাইট ও সমবায় বাজার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। সমবায় অধিদপ্তর মনে করে, উৎপাদনমুখী সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম সম্প্রসারিত হলে এবং এ সকল সমবায় পণ্য বাজারজাতকরণের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা ও ই-কমার্সের মাধ্যমে অনলাইনভিত্তিক পণ্য বিপণন কার্যক্রম ভালোভাবে শুরু হলে বেকওয়ার্ড লিংকেজ এবং ফরওয়ার্ড লিংকেজ এ অনেক সদস্যের আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। সমবায়ে উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়নের ফলে ৩টি জেলার ২৭টি সমবায় সমিতিতে মোট ৯০০ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সমবায় উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে তারা আয়োজন করছে নানান সংলাপ। সম্প্রতি এমন সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজদ উপস্থিত ছিলেন। মিল্ক ভিটার বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন