বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সংবিধান দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

আজ সংবিধান দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিনে গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়।

সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহ্বান করা হয়। সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করেন। গত ৪৮ বছরে নানা প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংশোধনও হয়েছে ১৬ বার। তবে সংবিধানে উল্লেখ থাকা সুনির্দিষ্ট অনেক আইন প্রণয়নের নির্দেশনা এখনও কার্যকর হয়নি। ফলে উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগ, ন্যায়পাল নিয়োগ, মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় নিম্ন আদালতকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইনে এখনও শূন্যতা রয়েছে।

আইনজ্ঞরা বলছেন, স্বাধীনতার পর থেকে সব সরকারের আমলেই সংবিধানে উল্লেখিত কিছু কিছু আইনের শূন্যতা পূরণের জন্য সুপারিশসহ দাবি উঠেছে। তবে সংশ্নিষ্ট বিষয়ে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা খর্ব হওয়ার শঙ্কা থেকে কোনো সরকারই আইনগুলো প্রণয়ন করেনি। তা ছাড়া জনগণও সংবিধানের প্রকৃত উদ্দেশ্য আত্মস্থ করতে পারেনি। জনদাবি জোরালো হলে সরকারও সংবিধানে উল্লেখিত বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে বাধ্য হতো। এ সংকট নিরসনে সংবিধান সংশোধনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা যেতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধানের ৯৫(৩) অনুচ্ছেদে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য যোগ্যতর ব্যক্তি বাছাইয়ে আইন প্রণয়নের কথা বলা আছে। এ প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০১২ সালের ৩ জুলাই সংসদ ও ২০১৪ সালের ১৯ আগস্ট আইন কমিশন থেকেও বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের একাধিক রায়েও বিচারপতি নিয়োগে আইন প্রণয়নের জন্য কয়েক দফা নির্দেশনা রয়েছে। এর পরও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

অন্যদিকে সংবিধানের ৪৪ (২) অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিম্ন আদালতকে সংবিধান ও মৌলিক অধিকার প্রশ্নে শুনানির এখতিয়ার প্রদান, ৭৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ন্যায়পাল নিয়োগ, ১১৮ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগসহ বেশ কিছু আলোচিত বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলো নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, কিছুটা গণতান্ত্রিক সরকার বিভিন্ন সময়ে সংশোধন করে সংবিধানকে ‹জগাখিচুড়ি› বানিয়েছে। এর মধ্যে মূল সংবিধানে স্বাধীন বিচার বিভাগের কথা থাকলেও এখন সেই ক্ষমতাও খর্ব করা হয়েছে। কারণ বিচার বিভাগের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দাপ্তরিক কাজ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আর কিছুই করার নেই।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, সংবিধান এখন যেটা আছে তা অনেকাংশেই ঠিক আছে। কিছুটা বৈপরীত্যও রয়েছে। বিশেষ করে একই সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের সন্নিবেশ যে যৌক্তিক নয়, তা উচ্চ আদালতের রায়েও উঠে এসেছে। কিন্তু এটা এখনও সংবিধানে বহাল রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন