অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) তাদের পক্ষ থেকে দায় স্বীকার করে টেলিগ্রামে ছবিসহ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। খবর রয়টার্সের।
সোমবার রাতে ভিয়েনায় সন্ত্রাসী তাণ্ডবের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৪ জন সন্দেহভাজকে গ্রেফতার করেছে অস্ট্রিয়ান পুলিশ। ওই ঘটনায় চার জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দু-জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে হাসপাতালে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। পুলিশের গুলিতে হামলাকারী মারা পড়ার আগে পর্যন্ত তার এলোপাথাড়ি গুলিতে ২২ জনেরও বেশি জখম হয়েছেন। এই সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে অস্ট্রিয়ান পুলিশ। মোট ১৮টি জায়গায় রেইড করা হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গা থেকে সবমিলিয়ে ১৪ জন গ্রেফতার হয়েছে। আদতে এটি সন্ত্রাসবাদী হামলা কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সন্দেহ থাকলেও অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনার রাতেই দাবি করেন ভিয়েনায় জঙ্গি হামলাই হয়েছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইসলামিক স্টেট ভিয়েনা হামলার দায় স্বীকার করে।
বিবৃতিতে কোনো প্রমাণ না দিয়ে কমপক্ষে চারজনকে হত্যা এবং ২২ জনকে আহত করেছে বলে তারা দাবি করেছে। জঙ্গিগোষ্ঠী তাদের বিবৃতিতে ওই ব্যক্তিকে আবু দুজানা আল-আলবানী হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
এর আগে ভিয়েনার ছয় স্থানে রাইফেল নিয়ে একদল হামলাকারী হামলা চালায়। যেখানে এক বন্দুকধারীসহ মোট চারজন নিহত হয়। ওই হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গোলাগুলির ঘটনায় ১৪ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলার ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তাও আহত হয়েছেন। অস্ট্রিয়া নতুন করে দেশজুড়ে কড়াকড়ি আরোপ করার কয়েক ঘণ্টা আগেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত এই কড়াকড়ি জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে। কড়াকড়ির আওতায় সব ধরনের বার এবং রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখা হবে। অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্তিযান কার্য এই হামলাকে বিদ্বেষপূর্ণ ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল নেহামার জানান, পুলিশের গুলিতে নিহত সন্দেহভাজন হামলাকারীর বয়স ২০ বছর। কুজতিম ফেজুল্লাহ নামের এ তরুণ অস্ট্রিয়া ও উত্তর মেসিডোনিয়ার যৌথ নাগরিক। এর আগে তিনি আইএসের হয়ে লড়তে সিরিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এ অপরাধে ২২ মাসের জেল খেটে গত ডিসেম্বরে ছাড়া পাওয়ার পর পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন তিনি।
হামলায় আরো এক বা একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে সন্দেহ করছে দেশটির পুলিশ। তাদের আটক করতে ভিয়েনা ও আশপাশের শহরতলিতে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জোরদার করা হয়েছে সীমান্ত তল্লাশি। শহরবাসীর নিরাপত্তায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় অস্ট্রিয়াজুড়ে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ডেমোক্রেটিক নেতা জো বাইডেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ ইউরোপীয় ও বিশ্ব নেতারা। খবর রয়টার্স, বিবিসি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন