স্টাফ রিপোর্টার ঃ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বিদেশগামী কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় সর্র্বনিম্ন করা হবে এবং তার জন্য মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালু হওয়ার ব্যাপারে আমরা অন্ধকারে রয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালু হলে কোনো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী প্রেরণের সুযোগ দেয়া হবে না। শ্রমবাজার চালু হলে সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিই কর্মী প্রেরণের সুযোগ পাবে। ৭শ’৩৫টি বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির নামের তালিকা মালয়েশিয়া সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, জর্ডান ও লেবাননে প্রচুর বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদা রয়েছে। জর্ডান ও লেবানন সফর শেষে গতকাল বুধবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি একথা বলেন। প্রেস ব্রিফিং-এ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, জর্ডান ও লেবানন সফরে আশাব্যঞ্জক সাফল্য এসেছে। তিনি বলেন, ৮ আগস্ট জর্ডানের শ্রমমন্ত্রী আলী আল গাজায়ী’র এর নেতৃত্বে জর্ডানের প্রতিনিধিদলের সাথে আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশী গৃহকর্মীদের সঠিক প্রশিক্ষণ, ত্রুটিমুক্ত মেডিকেল চেকআপ, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ব্য, কর্মস্থলের পরিবেশ গৃহকর্মীদের সুরক্ষা, দক্ষ কর্মী তৈরিতে সাম্প্রতিককালে গৃহীত পদক্ষেপ, জর্ডানে পুরুষ কর্মী গমনের সুযোগ সৃষ্টি এবং সকল খাতে (বিশেষ করে কৃষি ও নির্মাণ খাতে) বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য উন্মুক্তকরণের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম শামছুন নাহার, অতিরিক্ত সচিব জাভেদ আহমেদ, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো’র মহাপরিচালক সেলিম রেজা, যুগ্ন-সচিব আব্দুর রউফ, মোঃ আজাহারুল হক, জে এস আকরাম ও মন্ত্রীর একান্ত সচিব মুঃ মুহসিন চৌধুরী।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী নুরুল ইসলাস বিএসসি বলেন, ১১ আগস্ট লেবাননের শ্রমমন্ত্রী সিজান আজ্জি এর নেতৃত্বে লেবাননের প্রতিনিধিদলের সাথে আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং ১২ আগস্ট সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নুহাদ মাশনুক-এর সাথে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হই। তিনি জানান, বৈঠকে লেবাননের শ্রমমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি কর্মীরা এখানে দক্ষতার সাথে কাজ করছে, লেবাননের জনগণ বাংলাদেশি কর্মীদের পছন্দ করে, কেননা বাংলাদেশি কর্মীরা অনেক আন্তরিক। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জনান, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ হতে বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, সকল খাতে (বিশেষ করে নির্মাণ খাতসহ চিকিৎসক, নার্স, প্রকৌশলী) বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য উন্মূক্তকরণ, বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, আবাসন সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তিনি আরও জানান, লেবাননের শ্রমমন্ত্রী বলেন, লেবাননে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের ক্ষেত্রে সে দেশের বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন মজুরীর বিধান প্রযোজ্য হবে এবং নতুন বেতন উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর-পরই কার্যকর হবে। নতুন সর্বনিম্ন মজুরী কার্যকর করা হলে পুরুষ কর্মীরা ৪০০ মার্কিন ডলার এবং নারী কর্মীরা ২৫০ মার্কিন ডলার পাবেন।
তিনি আরও জানান, লেবাননের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের বিষয়ে সে দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন এবং বিনা ভিসায় অবস্থানকারী মহিলা কর্মীদের জরিমানা পরিশোধ ব্যতীত দেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানেরও আশ্বাস প্রদান করেন। জর্ডান এবং লেবাননের সরকারদ্বয় বাংলাদেশ থেকে আরও অধিক কর্মী নেয়া, কর্মরত কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা, অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন