বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

লাল সবুজে সুবর্ণ

২২ আগস্ট থেকে চলবে : যুক্ত হচ্ছে এসি কেবিন কোচ

প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নূরুল ইসলাম : লাল সবুজে সাজছে সুবর্ণ এক্সপ্রেস। ইন্দোনেশিয়ায় তৈরী বিলাসবহুল কোচ যুক্ত হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে বিরতিহীন আন্তঃনগর এই ট্রেনে। ২২ আগস্ট সোমবার থেকে নতুন কোচে চলবে সুবর্ণ। গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন কোচ নিয়ে ট্রেনটির লোড ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ২২টি লাল সবুজ কোচ দিয়ে লোড ট্রায়াল শুরু হয়ে লাকসাম স্টেশনে গিয়ে শেষ হয়। রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৬টি কোচ নিয়ে চলবে সুবর্ণ। তবে এবারই প্রথম এই ট্রেনে এসি কেবিন কোচ যুক্ত হচ্ছে। গত ২৬ জুন লাল সবুজ কোচ দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে নতুন বিরতিহীন ট্রেন সোনার বাংলা যাত্রা শুরু করে। নিম্নমানের খাবার পরিবেশনসহ নানা অনিয়মের কারণে সোনার বাংলা ট্রেনটি জনপ্রিয়তা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। সে হিসেবে এখনও পর্যন্ত সুবর্ণই বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেন। নতুন কোচ যুক্ত হলে ট্রেনটির যাত্রীসেবার মান অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মনে করছে। তবে ট্রেনটির গন্তব্যে পৌঁছার সময় (রানিং টাইম) নিয়ে বিতর্ক লেগেই আছে। রেলওয়ে বিশেষজ্ঞদের মতে, ডাবল লাইন (কিছু অংশ বাদে) চালু হওয়ার পর এখন অনায়াসে সাড়ে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছতে পারবে ট্রেনটি। বিরতিহীন ট্রেনটি এখন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে ৫ ঘণ্টা ৪০ মিনিট সময় নেয়।    
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানীকৃত নতুন লাল সবুজ কোচ সর্ব প্রথম সুবর্ণ এক্সপ্রেসে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে নতুন আরেকটি বিরতিহীন ট্রেন চালু করার ভাবনা থেকে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কর্তৃপক্ষ। নতুন কোচ দিয়ে সোনার বাংলা নামে আরেকটি বিরতিহীন ট্রেন চালু করা হয়। গত ২৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেনটির উদ্বোধন করেন। সোনার বাংলা চালু হওয়ার পর থেকে যাত্রীদের বিস্তর অভিযোগের মুখে পড়ে। শুরুতেই বাধ্যতামূলক খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন যাত্রীরা। এ ছাড়া অপরিচ্ছন্ন টয়লেটে পানি না থাকা, নিয়ন্ত্রণহীন এসি, ফিটিংসসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে ট্রেনটি। এসব কারণে ট্রেনটিতে আশানুরূপ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছিলো না। সে কারণেই সুবর্ণতে লাল সবুজ কোচ যুক্ত করতে সময় ক্ষেপণ করা হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, দিন দিন সোনার বাংলার যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। এখন মোটামুটি সবগুলো আসন পূর্ণ করেই ট্রেনটি চলাচল করছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ৭০২/৭০১ নং ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস বরাবরই যাত্রী দ্বারা পূর্ণ থাকে। বিশেষ করে এসি চেয়ারের চাহিদা ব্যাপক। সে কারণে ট্রেনটিতে লাল সবুজ এসি চেয়ার কোচ বাড়ানো হবে। একই সাথে এই প্রথম ট্রেনটিতে এসি কেবিন কোচ যুক্ত করা হবে। আগে সুবর্ণতে এসি কেবিন কোচ ছিল না। নতুনরূপে সুবর্ণ এক্সপ্রেসের লোড হবে ১৬/৩২। অর্থাৎ মোট কোচ থাকবে ১৬টি। যাত্রী সংখ্যা বাড়লে পরে কোচ আরও বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে সুবর্ণ চলছে ২০০৭ সালে চীন থেকে আমদানীকৃত সাদা কোচ দিয়ে। লাল সবুজ কোচ যুক্ত হলে সুবর্ণ’র সাদা কোচগুলো ঢাকা-সিলেট রুটের বিভিন্ন ট্রেনে যুক্ত করা হবে। সূত্র জানায়, সুবর্ণ’র পর লাল সবুজ কোচ পাবে ঢাকা-সিলেট রুটের পারাবত এক্সপ্রেস। সে লক্ষ্যে ট্রেনটির ট্রায়াল রানের প্রস্তুতি চলছে।    
এদিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের বিরতিহীন সোনার বাংলা ও সুবর্ণ এক্সপ্রেসের রানিং টাইম নিয়ে বিতর্ক লেগেই আছে। বর্তমানে এই দু’টি ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ৩২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে ৫ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। আর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসতে লাগে সাড়ে ৫ ঘণ্টা। এটাকে কমিয়ে অনায়াসে সাড়ে ৪ ঘণ্টা করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্ব (চট্টগ্রাম) বিভাগের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে বেশ কিছু স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। সেগুলোর রেল লাইনের পয়েন্টগুলো স্পর্শকাতর। ওই সব পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় ট্রেনের গতি কমাতে হয়। বন্ধ স্টেশনগুলোর মধ্যে থেকে কিছু স্টেশন আবার চালু করা হবে। সেগুলো চালু হলে এবং ডাবল লাইনের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে সুবর্ণ ও সোনার বাংলার রানিং টাইম প্রথমে ৫ ঘণ্টা এবং পরবর্তীতে সাড়ে চার ঘণ্টা করা হতে পারে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের প্রথম বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস চালু হয়েছিল ১৯৯৮ সালের ১৪ এপ্রিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন