শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মুসলিম দেশগুলোকে একসঙ্গে বসার আহ্বান শেখ হাসিনার

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওআইসি মহাসচিবের সাক্ষাৎ

প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : ধর্মের নামে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে ইসলামিক দেশগুলোর জোট ওআইসি’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবনে বাংলাদেশে সফররত ওআইসি’র মহাসচিব ইয়াদ আমিন মাদানী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, ওআইসি মহাসচিবকে প্রধানমন্ত্রী বাইরের কোনরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো একত্রিত হয়ে তাদের সংকট নিরসনে আলোচনায় বসতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশে ওআইসি’র মহাসচিবকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ এবং এর প্রকাশের বিরুদ্ধে আমরা শূন্য সহনশীলতা (জিরো টলারেন্স) ঘোষণা করেছি। সন্ত্রাসবাদকে তিনি বৈশ্বিক সমস্যা বলেও অভিহিত করেন। সন্ত্রাসীরা ইসলামের নামে সাধারণ মানুষকে হত্যার মাধ্যমে ইসলামের মর্যাদাই ক্ষুণœœ করছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
আমার পরিবারও সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিল উল্লেখ করে এ প্রেক্ষাপটে ওআইসিকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ ও সহিংসতা প্রতিরোধে ওআইসি’র ভূমিকার প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং ওআইসি মহাসচিব পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও মুসলিম বিশ্বের বিবদমান বিভিন্ন সমস্যাবলী নিয়ে আলোচনা করেন। মানবাধিকারের বিষয়টিও তাঁদের আলোচনায় উঠে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলীরা নিরীহ নিরপরাধ নারী-শিশু হত্যা করলেও অতীতে দেখা গেছে কোন মানবাধিকার সংস্থাই এ নিয়ে কথা বলেনি।
আগে দরিদ্র পরিবার এবং মাদ্রাসা ছাত্রদের সন্ত্রাসে জড়ানোর প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেলেও আজকাল বেশ অবস্থাপন্ন ঘরের উচ্চশিক্ষিত তরুণ-যুবকেরাও এপথে ঝুঁকছে, অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে মাদানি বলেন, সন্ত্রাস মোকাবেলায় ওআইসি সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন দেখতে চাই। সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে আরো সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, তরুণদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। তাদের বলা হচ্ছে, এভাবে মারা গেলে তারা বেহেস্ত পাবে। এভাবে তরুণদের বিপথগামী করা হচ্ছে। তরুণরা কেন সন্ত্রাসে জড়াচ্ছে তার মূল খুঁজে বের করতে হবে।
মহাসচিব জানান, ইরাক-সিরিয়া-লিবিয়াসহ সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে বিদ্যমান সমস্যার সমাধানের জন্যও ওআইসি পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ইহসানুল করিম বলেন, মহাসচিব ইয়াদ বিন আমিন মাদানী বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে জানমালের ক্ষয়-ক্ষতিতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। বর্তমানে বিশ্বে সন্ত্রাসী ঘটনা এবং সাইবার অপরাধ বেড়ে যাবার প্রেক্ষিতে ওআইসি মহাসচিব বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে ওআইসি সব সময়ই দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের পর থেকেই বিশ্বে সন্ত্রাসী ঘটনা এবং সাইবার অপরাধ বৃদ্ধি পেতে থাকে যদিও আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চাই। এ সময় ওআইসি সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশের সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকা-ে কার্যকর ভূমিকা পালনের বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে ওআইসি মহাসচিব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক স্থাপন করে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে তাদের দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কেও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, বেলজিয়ামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসি’র রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) স্থায়ী পর্যবেক্ষক মিশনে ওআইসি’র স্থায়ী প্রতিনিধি ইসমত জাহান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মো. জয়নুল আবেদিন প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন আইয়াদ আমিন মাদানী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন