স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের আর্থিক বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৭৭ কোটি ১৬ হাজার মার্কিন ডলার। প্রকৃত রপ্তানি আয় হয়েছে ২১১ কোটি ৭৫ হাজার ৮০ মার্কিন ডলার। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ দশমিক ৬০ শতাংশ কম। গুলশান ও শোলাকিয়ায় ঘটনার পরে বিদেশী ক্রেতারা বাংলাদেশে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন, নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তারা ক্রমাগত তাদের অর্ডার বাতিল করছেন। আমরা মনে করি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দেখিয়ে আত্মতুষ্টির দিন বোধহয় খুব বেশি আমাদের হাতে নেই। সার্বিক আর্থিক বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা একথাটার সত্যতা প্রমাণ করে।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে পোশাক রপ্তারিকারকগণ ও সংশ্লিষ্ট সেক্টরসমূহের বিশেষজ্ঞদের জোরদার সমন্বিত তৎপরতা গড়ে তোলে কর্মকৌশল নির্ধারণ প্রয়োজন বলে মনে করেন এই যুগ্ম মহাসচিব।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক রির্জাভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা লোপাটের প্রসঙ্গ টেনে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ লোপাটের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও অজ্ঞাত কারণে সরকার তা জনসমক্ষে প্রকাশ করছে না। আবার লোপাট অর্থ ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়তাকারী কোনো পক্ষকে সেটা (তদন্ত প্রতিবেদন) দিচ্ছে না। তাহলে নিদ্বির্ধায় বলা যায়, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। অতীতে যেভাবে হয়েছে, সেই লোপাটেই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাদের দায়ী করা হয়েছে বলে আমরা গণমাধ্যমের প্রকাশিত সংবাদে জানতে পেরেছি। অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু কোথায় গেলো সেই আইনি পদক্ষেপ? কেনো দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমরা শুনেছি, ১৫/২০ লাখ জনশক্তি মালয়েশিয়া যাবে। গতকাল (বুধবার) প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলছেন, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে বাংলাদেশ এখনো ধোঁয়াশের মধ্যে আছে। সউদী আরবে বাংলাদেশী প্রায় ২ হাজার শ্রমিক কর্মহীন অবস্থায় না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তাহলে প্রকৃত অবস্থাটা কী?
সব মিলিয়ে আমরা দেখতে পারছি, চোরদের রক্ষা করার জন্য সরকারের যে নিরলস প্রচেষ্টা জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে তা নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে। এর আগেও অনেক আর্থিক কেলেঙ্কারীর হোতাদের আইনের আওতায় না এনে সরকার বরং তাদের সুরক্ষা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান, বিএনপি নেতা জাহানারা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন