শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আ.লীগ নেতার রোষানলে বৃদ্ধ বাড়ি ছাড়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

বান্দরবানের লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান সদস্য এবং সরই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিকদারের রোষানলে পড়ে পালিয়ে ঢাকায় এসেছেন বয়োবৃদ্ধ সাহেব আলী তালুকদার (৭০)। তার অভিযোগ মোহাম্মদ আলী তার জমি কেড়ে নিয়েছে। এখন জীবন কেড়ে নিতে চায়। জমি ফেরত পেতে বান্দরবানের অতিরিক্তি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করায় আরো ক্ষিপ্ত হয়েছে ভূমিদস্যু চক্রটি। তবে মোহাম্মদ আলী সিকদার বলেছেন, তার সাথে সাহেব আলীর জমি নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। এদিকে বিচারের আশায় সাহেব আলী তালুকদার রাজধানীর সেগুন বাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ও ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ (ক্র্যাব) বিভিন্ন দফতরে ঘুরেছেন সাহেব আলী।

এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমাদের পৈতৃক বাড়ি ভোলা জেলায়। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আমাদের প্রতিবেশী ও আত্মীয়। কিন্তু গরিব কৃষক হওয়ায় তার কাছে যেতে পারছি না। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ভোলার নিজ বাড়ি ছেড়ে পরিবারের ভাই-চাচারা মিলে ১২ জন লামায় চলে যান। লামা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ডলুছড়িতে গিয়ে আমরা বসবাস করতে থাকি। ১৯৮১-৮২ সালে সরকার আমাদের আবাদ করা ও দখলে থাকা প্রায় ৬০ একর জমি ১২ জনের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রত্যেকের ভাগে সাড়ে ৪ একর বা ৫ একর করে জমি বন্দোবস্ত দেয়। পাহাড়ি অকেজো জমিগুলো আমরা রাতদিন পরিশ্রম করে বসবাস ও চাষাবাদের উপযোগী করি। আমার অন্য ভাইয়েরা তাদের জমিগুলো আমাকে কাঁচা দলিলমূলে বিক্রি করে দখলসহ বুঝিয়ে দিয়ে সবাই ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় চলে যান। কেউ কেউ আবার বিক্রির পর মারা যান। আমি একা দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে জমিগুলোতে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের বাগান করি। পাশাপাশি ফসলি জমিতে চাষাবাদ করি।

কিন্তু ২০১৬ সালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিকদার জমিগুলো তার বলে দাবি করে আমাকে দখল ছেড়ে দিতে বলেন। আমি দখল ছাড়তে না চাইলে সে লোকজন নিয়ে আমার ছয়টি পুকুরসহ সমুদয় স্থাবর সম্পত্তি জবরদখল করে নেয়। এরই দুই মাস পর একদিন গভীর রাতে মুখোশ পরা সশস্ত্র লোক আমার বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে বাড়িতে থাকা সকল দলিলপত্র নিয়ে যায়। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মুখে আমার ক্রয় করা কিছু জমি ছেড়ে দেই। পরে আমার নামে বন্দোবস্ত পাওয়া ৫ একর জমিতে বসবাস করতে থাকি। প্রায় আড়াই মাস আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বন্যহাতি আক্রমণ করে আমার ঘরবাড়ি ভেঙে দেয় এবং আমার স্ত্রী হাতির আক্রমণে নিহত হয়। আমি ঘর মেরামত করতে গেলে জমিগুলো জবরদখল করা ব্যক্তিরা আমার ভিটাও তার বলে দাবি করে। মারধর করে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। পরে আমি জানতে পারি আমার নামীয় খতিয়ান জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে রেজিস্ট্রি করে তার সন্তানের নামে নামজারি করে নিয়েছেন।

সাহেব আলী বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করি। এই খবর পেয়ে মোহাম্মদ আলী সিকদার আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। তিনি আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।পরে আমি ভয়ে ঢাকায় চলে আসি। গতকাল রাতে সরই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সিকদার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন সাহেব আলী। তার সাথে জমি নিয়ে আমার কোনো বিরোধ নেই। বিষয়টি তদন্ত করার অনুরোধ করেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন