বাসস : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সঠিক তথ্যপ্রবাহই সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমনে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। এ ব্যাপারে ভারতের তথ্য এবং সম্প্রচারমন্ত্রী ভেনকাইয়া নাইডু’র সাথে সফল আলোচনা হয়েছে। ভারত সফরের ৪র্থ দিনে গতকাল দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে হাসানুল হক ইনু এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভাটি পরিচালনা করেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী।
হাসানুল হক ইনু বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই, ইতিহাস নেই, কোনো সংস্কৃতি নেই। সন্ত্রাসীরা সব সময় মিথ্যা, গুজব এবং প্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ভেনকাইয়া নাইডুর সাথে আলোচনাকালে আমরা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ধর্মভিত্তিক ডকুমেন্টারি এবং ফিচার ফিল্ম তৈরির ব্যাপারে একমত হয়েছি, যার মাধ্যমে আমরা মিথ্যা, গুজব, অলীক প্রচারণা এবং ইতিহাসের বিকৃতি প্রতিরোধ করতে সক্ষম হব। তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যে সকল পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তুলতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আমাদের দেশের পরিস্থিতি অনেক ভিন্ন। তৃণমূল পর্যায়ে বাংলাদেশের সমাজে অসাম্প্রদায়িক এবং সম্প্রীতির সম্পর্ক বিরাজমান। বাংলাদেশে ধর্ম পালিত হয় সম্প্রীতির সাথে। তাই পাকিস্তানের মতো সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা আমাদের দেশে তৈরি করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংঘটিত সকল সন্ত্রাসী তৎপরতা দেশীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত এবং এসব তৎপরতায় আন্তর্জাতিক কোনো গোষ্ঠীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হাসানুল হক ইনু জানান, ভারত ও বাংলাদেশ যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের ওপর ডকুমেন্টারি নির্মাণের ব্যাপারে একমত হয়েছে। আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর একটি মেগা ফিচার ফিল্ম তৈরি করার ব্যাপারেও চিন্তা করছি। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা সামাজিক গণমাধ্যমে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার পক্ষে। তবে আমরা নারী ও শিশুর সম্মান এবং রাষ্ট্র ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। নাগরিকদের ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা রক্ষা করতে চাই। সাইবার অপরাধ আইন এই লক্ষ্যে কাজ করবে।
বাসসের দিল্লি প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদ কোনো আইন-শৃঙ্খলাবিষয়ক সমস্যা নয়। এটি একটি রাজনৈতিক বিষয়। বর্তমানে সন্ত্রাসবাদ একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা হলেও বিভিন্ন দেশ এবং সমাজে এটি ভিন্ন ভিন্ন রূপে প্রকাশ পাচ্ছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকল উপায়কেই সমন্বিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে ধর্ম, ইতিহাস এবং সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে হবে। সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের পর তথ্যমন্ত্রী বিকেলে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন-এর সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি আজ আজমীর যাবেন। ২১ আগস্ট তিনি বাংলাদেশের উদ্দেশে দিল্লি ত্যাগ করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন