বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রাজনীতি থেকে বিএনপিকে সরানোর ষড়যন্ত্র করছে সরকার মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জঙ্গিদের অনেকের পিতা আ’লীগ নেতা
স্টাফ রিপোর্টার : সরকার মূলধারার রাজনীতি থেকে বিএনপিকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার বিকেলে এক দোয়া মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, আজ দলের বড় দুঃসময়। আজকে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার জন্য। এই ষড়যন্ত্র বসে বসে হচ্ছে না, প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা হুমকি দিচ্ছেন যে, বিএনপিকে নির্মূল করে দেয়া হবে।
একটি গণতান্ত্রিক শক্তি যারা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রের পক্ষে সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, সব রকম ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে, সেই দলটিকে আজকে নির্মূল করে দেয়া, তাকে একেবারে শেষ করে দেয়ার যে ঘোষণা আওয়ামী লীগের কিছু কিছু নেতা দিচ্ছেন, এটা থেকে কিন্তু একটি ষড়যন্ত্রের আভাস পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, তারা আসলে বিএনপিকে মূল রাজনৈতিক ধারা থেকে সরিয়ে দিতে চায়।
মির্জা ফখরুল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই বিষয়টি (ষড়যন্ত্র) আমাদের যারা বিএনপির সঙ্গে যুক্ত আছেন শুধু তারাই নয়, দেশের সমগ্র গণতান্ত্রিক শক্তি ও সচেতন মানুষের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। অর্থাৎ তাহলে কী সরকারের উদ্দেশ্য, আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য তারা বাংলাদেশে বহুদলীয় রাজনীতি, সেই রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা আগের যে স্বপ্ন একদলীয় শাসনব্যবস্থা, সেটাকে তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চায় এবং সেটাই তারা ধীরে ধীরে প্রমাণ নিয়ে আসছে।
বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সদ্য মরহুম ফজলুর রহমান পটলের রুহের মাগফিরাত কামনায় এই মিলাদ মাহফিল হয়।
গত ১১ আগস্ট কলকাতা রবীন্দ্র সদন হাসপাতালে ফজলুর রহমান পটল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কথা স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের মরহুম নেতা সালাম তালুকদারকে শুধু স্মরণ করবো না, অনুসরণ করব। তিনি সঠিকভাবে উপলব্ধি করেছিলেন, তখন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে স্বৈরাচারকে পরাভুত করা সম্ভব হয়েছিলো। এটাই বাস্তবতা। আজকেও সময় উপস্থিত হয়েছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করার জন্য, তার ভোট দেবার অধিকার রক্ষা করবার জন্য, তার লেখা ও কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য আজকে সমগ্রজাতির ঐকবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমান সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আজকে ফ্যাসিস্ট শক্তি জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে। তারা জঙ্গিবাদের কথা বলছে, তাদের নির্মূল করার জন্য নয়। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, তারা নিজেদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। তারা (সরকার) যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাদের কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই, কোনো রকম আদালতে প্রেরণ ছাড়াই, বিচার ছাড়াই ক্রসফায়ারের নাম করে হত্যা করা হচ্ছে। এগুলো হালকা করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার কথায় কথায় বলে জঙ্গিবাদের সঙ্গে বিএনপি জড়িত। অথচ আজ পর্যন্ত তারা একটি ঘটনায় প্রমাণ করতে পারেনি যে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে বিএনপি জড়িত রয়েছে। উপরন্তু প্রমাণিত হয়েছে যে যারা এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত হিসেবে অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে, তাদের পিতা আওয়ামী লীগের নেতা। তাদের বাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা। তারা আওয়ামী লীগের ঘরনার পুত্র এবং সন্তান।
ভেদাভেদ ভুলে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে যে বিপদ সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, তাকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। বাংলাদেশেকে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আর সেই জন্য জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করার জন্য দেশনেত্রী যে জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন, সেটাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির আহ্বান আবারো জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কথাও বলেন ফখরুল ইসলাম।
দোয়া মাহফিলে মোহাম্মদ শাহজাহান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার কাওসার কামাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, হাবিবুল ইসলাম, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান, তাইফুল ইসলাম টিপু, শহীদুল ইসলাম বাবুল, বেলাল আহমেদ, সাইফুল ইসলাম পটু, সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, খান রবিউল ইসলাম রবিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন