কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুরের সঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদি গোষ্ঠি জড়িত বলে দাবি করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকে ওই ঘটনায় জড়িত ও তাদের ইন্ধনদাতাদের দ্রুত গ্রেফতারের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধিতাকারীদের বিপক্ষে জনমত গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান। বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, এ বি তাজুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ও মোছলেম উদ্দিন আহমদ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পূর্ব নির্ধারিত এজেন্ডা না হলেও সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর এবং ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির আস্ফালন নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়। এ সময় কমিটির সদস্যরা ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি তারা বলেন, ১৯৭১ সালে ইসলামের নামে খুন-ধর্ষণ, ২০১৩ সালে আন্দোলনের নামে কোরান শরীফ পোড়ানো এবং বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর ও ভাস্কর্য নির্মাণে বিরোধিতা একই সূত্রে গাঁথা। তাই জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলবে হবে।এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, একটি চক্র অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভাস্কর্যকে ইস্যু করে পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা করছে। তাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে বিভিন্ন ওয়াজে কথা হয়েছে। এই চক্র মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামের নামে খুন, নারী ধর্ষণ ও গণহত্যা এবং ২০১৩ সালে আন্দোলনের নামে কুরআন শরীফ পোড়ানোসহ অগ্নি সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিলো। কমিটির পক্ষ থেকে স্বাধীনতা বিরোধী ওই চক্রকে প্রতিহর করার আহবান জানানো হয়েছে।
বৈঠকে রাজাকারদের তালিকা তৈরির অগ্রগতি নিয়ে আলেচনা হয়েছে উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত সাব কমিটির প্রধান বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ সংসদের উপজেলা পর্যায়ের সদ্য সাবেক কমান্ডারকে আহবায়ক করে এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন জীবিত কমান্ডারদের নিয়ে রাজাকারদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই করার পরামর্শ দিয়েছি। মন্ত্রণালয় এ কমিটি গঠনের জন্য সব জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেবে।
ইতোমধ্যে ৪২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যাছাই-বাছাই হয়েছে উল্লেখ করে সভাপতি বলেন, দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগই আওয়ামী ঘরনার। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আওয়ামী লীগের প্রাধান্য বেশি দেখে ক্ষমতায় থাকলে বিএনপি ২০০৫ সালে তাদের মনোভাবাপন্ন অনেককে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেন। এদের বেশিরভাগই ছিলো ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। পিস কমিটির নেতাদেরও তখন মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। যার কারণে বিষয়টি নতুন করে যাচাই হচ্ছে। বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্ট ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের শূণ্য পদে দ্রুত নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন