শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মুহুরী-কহুয়ার বেড়িবাঁধে ভাঙন

পরশুরাম ও ফুলগাজীতে ১০ গ্রাম প্লাবিত : প্রতিবছর মেরামতের নামে চলছে লুটপাট

প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফেনী জেলা সংবাদদাতা : মুহুরী ও কহুয়া নদীর বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থান ভেঙে গেছে। টানা দু’দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়ায় এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তীব্র বেগে নদীর পানি ফুলগাজী বাজার ও এর আশেপাশের গ্রাম প্রবেশ করছে। গতকাল  (সোমবার) মুহুরী ও কহুয়া নদীর পানি বিপদসীমার দেড় মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে করে ফেনী-ফুলগাজী সড়কের ফুলগাজী বাজার অংশ এবং গ্রামীণ রাস্তাঘাট, হাটবাজার পানিতে তলিয়ে গেছে।
ডুবে গেছে সদ্য লাগানো রোপা আমন ধান ও সবজি ক্ষেত। ভেসে গেছে ওইসব গ্রামের কয়েক’শ পুকুর ও ঘেরের মাছ। এতে স্থানীয় কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে। ইতোপূর্বে গত ১৭ জুলাই ফুলগাজী উপজেলার উত্তর দৌলতপুর অংশে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ৩০ মিটার অংশ ভেঙে উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, ঘনিয়ামোড়া ও বরাকপুর গ্রামসহ চার গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। ওই সময়ের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে না উঠতেই নতুন করে আরও এক দফা আকস্মিক বন্যার কবলে পড়েছে স্থানীয়রা।
এদিকে প্রতিবছরই বর্ষকালে এ ২ উপজেলার মুহুরী কহুয়া বেড়িবাঁধে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। ফলে এ অঞ্চলের মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে। ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি ছাড়াও পুকুরের লাখ লাখ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে যায়। স্থায়িভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণে বেড়িবাঁধ না থাকায় এবং পাউবোর অর্থ লুটের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হ্েচ্ছ মুহুরী, কহুয়া নদী। স্থানীয়রা জানান, নদীর ড্রেজার না থাকা, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং বাঁকা নদী সোজা না করার কারণে বারবার একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এলাকার মানুষকে। ফেনী পাউবোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দিন কাটে আরাম-আয়েশ আর বিলাসী জীবনযাপনের মধ্যদিয়ে। নির্বাহী প্রকৌশলী কোহিনুর আলম নিয়মিত অফিস করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। বেড়িবাঁধ ভাঙার পরও তাদের তৎপরতা চোখে পড়েনি বলেন জানান এলাকাবাসী।
এদিকে, গতবারের বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাঁধের কাজও শতভাগ সম্পন্ন হয়নি। ৫০ ভাগ কাজ শেষ করে বিলের জন্য বাকী কাজ করেননি নিয়োগকৃত ঠিকাদার। কোনো পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়ে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যানের ভগ্নিপতি সেলিম মেম্বারকে দিয়ে বালির বাঁধ দিচ্ছে পাউবো। শুধুমাত্র প্রভাব খাটিয়ে প্রতিবারই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতারা বিনা টেন্ডারে নামমাত্র কাজ সম্পন্ন করে মোটা অংকের বিল আদায় করেন। পাউবোর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে বছরের পর বছর মুহুরী-কহুয়া প্রকল্পে চলছে লুটপাটের মহোৎসব।
এদিকে বন্যায় ১০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার তিনদিন পার হলেও কোনো প্রকার ত্রাণ পাননি এলাকাবাসী। বন্যা পরিস্থিতি জানতে ফোন করা হলে ফেনী পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী জানান, বর্তমানে বিপদ কেটে গেছে। এছাড়া ভাঙা বাঁধগুলো সংস্কারে উপরে জানানো হয়েছে। গত বছরের বাঁধ বন্যা শুরু হওয়ার পর করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের বোনের জামাই বাঁধ নির্মাণের কাজ করছে। বাঁধের বাকী অংশের কাজ এখনো চলছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন