বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

একবেলা উপোস থাকেন নগরবাসীর ৭ শতাংশ

পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশের রাজধানী ঢাকাসহ নগরাঞ্চলের বাসিন্দারা মাসের মোট ব্যয়ের অর্ধেকের বেশি খরচ করে খাদ্যের পেছনে। আর ঘরভাড়ার জন্য তাদের ব্যয় হয় খরচের এক পঞ্চমাংশ। মাথাপিছু মাসিক খাদ্য ব্যয় দুই হাজার টাকার বেশি। খাবার নিয়ে চিন্তায় থাকেন ২১ শতাংশের বেশি মানুষ। আর খাবার না পেয়ে একবেলা উপোস থাকতে হয়েছে ৭ শতাংশকে। স¤প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত জরিপ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

নগরাঞ্চলে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সুবিধাভোগী নির্বাচনের উপায় নির্ধারণের লক্ষ্যে খাদ্য নিরাপত্তা ও আর্থ-সামাজিক বৈশিষ্ট্য নিরূপণের জন্য ‘নগর আর্থ-সামাজিক অবস্থা নিরূপণ জরিপ ২০১৯’ শিরোনামে পরিচালিত হয়। জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলপত্র বাস্তবায়নে শহরাঞ্চলের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের সুবিধাভোগী নির্বাচন পদ্ধতি প্রণয়নে ২০১৯ সালের ৮-২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জরিপ চালানো হয়। নিম্ন আয়ের অংশকে প্রাধিকার দিয়ে উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন আয়ের ভিত্তিত্তে নির্বাচিত ৮৬টি প্রাথমিক নমুনা এলাকা হতে দুই হাজার ১৫০টি নগরাঞ্চলের খানা হতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপটি নিম্নআয়ের মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে পরিচালনার পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনটি শ্রেণির মানুষের প্রায় সমান প্রতিনিধিত্ব ছিল।

বিভাগীয় শহর ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে এ জরিপ পরিচালিত হয়েছে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করতে জরিপটি করা হয়েছে বলে এর ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপপরিচালক মো. আলমগীর জানান। তিনি বলেন, ৫ শতাংশ উচ্চ, ২০ শতাংশ মধ্যম ও ৭৫ শতাংশ নিম্ন শ্রেণির খানার প্রতিনিধিত্বে জরিপ পরিচালনার উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে কাজ করতে গিয়ে তিন শ্রেণির প্রায় সমান প্রতিনিধিত্ব পাওয়া গেছে। ফলে জরিপের ফলাফল জেনারেলাইজ বলতে পারেন।

জরিপে দেখা গেছে, শহরাঞ্চলে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুবিধাভোগী খুবই কম পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, শিক্ষার সর্বস্তরের উপবৃত্তি, পেনশন ও খোলাবাজারে ক্রয় (ওএমএস)সহ ২০ ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগী মাত্র ১১.৭৯ শতাংশ। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মস‚চির আওতায় সুবিধাভোগীর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি সর্বোচ্চ ৩.৩৮ শতাংশ। এছাড়া বয়স্ক ভাতা ২.২০ শতাংশ, ওএমএস ১.২৭ শতাংশ ও পেনশন কর্মস‚চি ১.৩৮ শতাংশ।

জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী মাথাপিছু ভোগকৃত উপকরণসমূহের ব্যয় তিন হাজার ৯৬৬ টাকা। এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চার হাজার ৪২ টাকা এবং অন্যান্য শহরে তিন হাজার ৬৮৩ টাকা। ভোগ্যপণ্যের মধ্যে খাদ্যে ব্যয় দুই হাজার ২৭ টাকা এবং খাদ্যবহির্ভ‚ত খাতে এক হাজার ৯৩৯ টাকা।

মাসের মোট ব্যয়ের মধ্যে খাদ্যে ৫০.৭৫ শতাংশ, ঘরভাড়া ২০.৮১, চিকিৎসা ৪.৭২, বিদ্যুৎ বিল ৪.৭২, পোশাক ৩.২২, যাতায়াত ৩.১৩, শিক্ষা ২.৪, প্রসাধন টয়লেট্রিজ ও পরিষ্কার দ্রব্য ২.১৬, জ্বালানি ২.১৬, মোবাইল বিল ১.৬২, সামাজিক অনুষ্ঠান/ধর্মীয় অনুষ্ঠান/দান ১.০৮, পানি, ডিশ ও টেলিফোন বিল ০.৯১ শতাংশ, জুতো/স্যান্ডেল ০. ৯১ বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ গৃহকর ০.৫৮, ব্যক্তিগত পরিচর্যা ০. ৪১, আসবাবপত্র বাসন-কোসন ০.৩৩, গহনা ০. ৩১, গৃহকর্মী ০.২৪, আইন ফি ০.২২, বিছানাপত্র ০.২২, বিনোদন ০.১৩ এবং অন্যান্য ০.০৪ শতাংশ।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী বিগত ৩০ দিনে (জরিপের সময়কালের) পর্যাপ্ত খাবার না থাকায় চিন্তিত ২১.২৫, পছন্দের খাবার খেতে পারেনি ২০.২৫, অল্প কয়েক খাবার খেতে হয়েছে ১৬.৬৩, অপছন্দের খাবার খেতে হয়েছে ১৪.৯৬, প্রয়োজনের তুলনায় কম খেয়েছে ১৪.৪৮, খাবার না থাকায় একবেলা উপোস থেকেছে ৬.৯৪, খাবার ছিল না/খাবার কেনার টাকা ছিল না ১১.৫১ এবং রাতেক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে গিয়েছে ৮.২২ শতাংশ।
গত এক বছরে বিভিন্ন কারণে ২৯.৭৪ শতাংশ অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য ১১.৭৯ শতাংশ বিপর্যয়ে পড়েছেন।

জরিপ অনুযায়ী বিভিন্ন জেলা থেকে নগরে নগরে স্থানান্তরিত হওয়ায় এগিয়ে রয়েছে ভোলা জেলা। স্থানান্তরিত জনগণের ১৭.১১ শতাংশ এ জেলার। এছাড়া বরিশাল থেকে ১০.৬৯, সিরাজগঞ্জ থেকে ৫.৯৮, ঢাকা জেলা থেকে ৫, কুমিল্লা থেকে ৪.৭৮, কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে ৪.৩৬, চট্টগ্রাম থেকে ৩.৭৭ ও ফরিদপুর থেকে ২.৮৬ শতাংশ শহরাঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়েছে। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Mohammed Hossain ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৭ এএম says : 0
সমস্যা নাই, জনগন না খেয়ে দিনের পর দিন উপোস থাকলে কি হবে কিন্তু আমার দেশে তো ............. তৈরি হচ্ছে, ওটা দেখে দেখে পেট ভরে নেবে
Total Reply(0)
Mohammed Saleh Bablu ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৯ এএম says : 0
গ্রামেরও অনেক মানুষ একবেলা উপোস থাকে।
Total Reply(0)
Belal Hossin ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৩০ এএম says : 0
এটা কি দেশ নাকি উন্নত হইছে?শহুরে জীবন গ্রামীণ জীবনের চেয়ে দিগুন খারাপ। এই জরিপটা 100% সঠিক কোনো ভূল নেই। গ্রামীণ মানুষগুলো না খেয়ে থাকেনা কিন্তু শহরে থাকে। মানুষের মুখে অমসৃণ হাসিটা দেখলেই বুঝতে পারবেন।
Total Reply(0)
Shamim Arriyen ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৩০ এএম says : 0
পাগল নাকি, আমরা সিংগাপুরের নাগরিক
Total Reply(0)
Mizanur Rahman Shamim ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৩২ এএম says : 0
মধ্যম আয়ের দেশ, কি ভাবে সম্ভব, তথ্যে ভুল আছে!
Total Reply(0)
Jack Ali ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:১২ পিএম says : 0
If our country ruled by the Law of Allah then there will be no more poor people. From PM to all government employee get their salary from our hard earned tax payers money,, whereas they are servant of People but in our country we are slave of the Government. Is it Humanity?????.. they live like King and Queen.. The government will be held responsible to Allah [SWT], they cannot get away from severe punishment from Allah.. They don't believe in Allah as such they are torturing and oppressing us in every sphere in our life. O'Allah appoint a Muslim Leader who will rule our Beloved country by the Law of Allah so that we will be able to live in peace, security and with human dignity and also there will be no more poor people.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন