খুলনা থেকে বিশেষ সংবাদদাতা : গেল রোববার দিনভর অতিবৃষ্টিতে খুলনা মহানগরীর ২৫টি ওয়ার্ড ও জেলার ৬১টি ইউনিয়নের আমন ধান ও শাকসবজি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। জমির পরিমাণ ১৩ হাজার হেক্টর। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩০ কোটি টাকা। সরকারি খাস খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার ফলে অতিবৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে বিলম্ব হচ্ছে। কৃষকরা নাবীজাতের আমনও রোপণ করতে পারবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার গভীর রাত পর্যন্ত জেলায় ২৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। গত ২০ বছরের মধ্যে এবারের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হলো-নগরীর দেয়ানা, আড়ংঘাটা, রায়েরমহল, ছোটবয়রা, মুজগুণœী, সোনাডাঙ্গা, পশ্চিম বানিয়াখামার, পূর্ব বানিয়াখামার, হরিণটানা, টুটপাড়া, মোল্লাপাড়া, লবণচরা, জেলার বটিয়াঘাটা, দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রা, ডুমুরিয়া, ফুলতলা, দিঘলিয়া, তেরখাদা ও রূপসা উপজেলা। দিঘলিয়া ও রূপসা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন বাদে জেলার বাকি ৬১টি ইউনিয়নের ধান, মাছ ও শাকসবজি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। শাকসবজির মধ্যে বেগুন, পটল, পেঁপে ও কাঁচা মরিচ গাছ ইতিমধ্যে বিনষ্ট হয়েছে। জেলায় ৪ হাজার ৪৯১ হেক্টর আমন বীজতলার মধ্যে এক ১২৬ হেক্টর, ৩৪ হাজার আমন আবাদের মধ্যে ৯ হাজার ২৮৫ হেক্টর এবং ৫ হাজার হেক্টর শাকসবজির মধ্যে ২ হাজার ২৯৪ হেক্টর জমি তিনদিন যাবৎ পানিবদ্ধতায় পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, ডুমুরিয়া উপজেলার শিয়ার বাওয়া, পঁচা ও কাটা খালে বাঁধ দিয়ে সাদা মাছ চাষ হওয়ায় এখানে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। আমন ধান ক্ষেত, শাকসবজি বিনষ্ট হয়েছে। বিল ডাকাতিয়া এলাকার মানুষ পানিবদ্ধতার কবলে পড়েছে। ভবদহে পানি থৈ থৈ করছে।
জেলার কৃষি কর্মকর্তা (প্রশিক্ষণ) পঙ্কজ কান্তি মজুমদার জানান, দাকোপ উপজেলার কালাবগি, বানিশান্তা, কয়রা উপজেলার বাগালী ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আমন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, রাড়–লি ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম, হরিঢালীর ৪টি গ্রাম ও কপিলমুনি ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের আমন ফসল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এখানকার আদা, হলুদ, পটল, বেগুন ও কাঁচা মরিচ গাছ করতে শুরু করেছে। দাকোপ উপজেলার বাজুয়া ইউপি চেয়ারম্যান রঘুনাথ রায়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চুনকুড়ি ও বাজুয়া গ্রামে জলাবদ্ধতায় আমন আবাদের ক্ষতি হয়েছে। স্লুইচ গেট খুলে দেয়া হয়েছে পানি নিষ্কাশনের জন্য। চুনকুড়ি গ্রামের ১৩টি পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন