স্টাফ রিপোর্টার : মরহুম প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী মহিলা লীগের নেত্রী আইভি রহমানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এছাড়াও আইভি রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠন, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন আলোচনা সভা, কোরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, পুষ্পস্তবক অর্পণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। বনানী কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে আওয়ামী লীগ নেতারা ফাতেহা পাঠ এবং মরহুমা আইভি রহমানের রূহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও এ কে এম এনামুল হক শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, যুব মহিলা লীগ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা তাদের নিজ নিজ সংগঠনের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে আইভি রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
আইভী রহমানের পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমার বাসভবন গুলশানের আইভি কনকর্ড টাওয়ারে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আইভি রহমান মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটি সকালে শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
অ্য্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বিএনপি মহাসচিবের আবেগতাড়িত হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপি একটি পাপিষ্ট দল। এই দলের নেতৃত্বে যেহেতু আছেন, আপনাকে সারা জীবনই কাঁদতে হবে। বিএনপি কখনো প্রগতিশীল রাজনীতি করেনি এবং কখনো এই ধারায় ফিরে আসতেও পারবে না। ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে যারা এদেশে হত্যা, ধর্ষণ, লণ্ঠন, জ্বালাও-পোড়াও করেছেÑ তারাই ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে, জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যা করেছে। এরাই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আবার এরাই দেশে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে, গুপ্তহত্যা করেছে। এখন নতুনরূপে জঙ্গি হামলা চালাচ্ছে। এসব ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: শাহে আলম মুরাদ বেগম আইভি রহমান সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন, মরহুম বেগম আইভি রহমান ছাত্রলীগ করা অবস্থায় ছাত্র নেত্রীদের নিয়ে সবসময় একত্রিত হয়ে থাকতেন। তিনি কোনো সভা মঞ্চে উঠে বসতেন না। সব মহিলা নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মঞ্চের সামনে নিচে অবস্থান নিতেন।
তিনি বলেন, ২১ আগস্টের হত্যাকারীরাই আজ দেশে জঙ্গিবাদ চালিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা নস্যাৎ করতে চায়। তিনি মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অধীন সব নেতাকর্মীকে সজাগ থাকার ও প্রশাসনকে সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করার আহ্বান জানান।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো: আবু কাওছার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা: কামরুল হাসান খান ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বক্তব্য রাখেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আইভি রহমান মারাত্মক আহত হন। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মীর মৃত্যুর ৩ দিন পর ২৪ আগস্ট গুরুতর আহত আইভি রহমান সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (বিএমএইচ) মারা যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন