বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দীপন হত্যা মামলার আসামি শামীম রিমান্ডে

প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যার সন্দেহভাজন সমন্বয়কারী এবং পুরস্কার ঘোষিত আসামি মইনুল ইসলাম শামীম ওরফে সিফাত গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দীপন হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের প্রধান (সিটি) মনিরুল ইসলাম এ কথা বলেন। মনিরুল ইসলাম বলেন, দীপন হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি ছিলেন মঈনুল ইসলাম শামীম। আর এ হত্যার মাস্টারমাইন্ড সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মেজর জিয়া। গ্রেফতারকৃত শামীম দীপন হত্যাকা-ের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত অপর পাঁচজনকে তিনি পরিচালনা করেছেন। এর আগে গত বছর সাভারের ব্যাংক কলোনিতে রিয়াদ মোর্শেদ বাবু নামে এক ব্লগার হত্যায়ও সারাসরি জড়িত ছিলেন শামীম। দীপন খুনের এক মাস আগে থেকে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃত শামীমের বাড়ি সিলেট জেলার সুনামগঞ্জে। তিনি ময়মনসিংহের মদনমোহন কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।
মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, দীপন হত্যাকা-ে জড়িত এবিটি সদস্যদের প্রশিক্ষক ও পরিচালনার সার্বিক দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল গ্রেফতারকৃত শামীম। তার বেশ কয়েকটি সাংগঠনিক নাম আছে। তিনি শামীম ছাড়াও কখনো সিফাত, সামির, ইমরান নামেও পরিচিত। সাভারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিয়াদ মোর্শেদ বাবু হত্যাকা-েও সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। তিনি এবিটির সামরিক শাখার শীর্ষ চার দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। এছাড়া তিনি মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিংয়ে বোমা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টঙ্গী থেকে শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। তার সম্পর্কে তথ্য দিতে দুই লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ডিএমপি।
লেখক, ব্লগার, প্রকাশক, ভিন্নমতাবলম্বীসহ অন্তত ১০ জনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত মে মাসে পুলিশ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সন্দেহভাজন ছয় জঙ্গির ছবি প্রকাশ ও পুরস্কার ঘোষণা করে। ওই ছয়জনের মধ্যে শামীম ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ অক্টোবর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতির কার্যালয়ের ভেতরে দীপনকে হত্যা করে জঙ্গিরা।
শামীম রিমান্ডে
কোর্ট রিপোর্টার জানান, জাগৃতির প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যার আসামি মইনল হাসান শামীম ওরফে সিফাতকে ৬ দিন রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গতকার ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব এ আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজিরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে টঙ্গী থেকে দীপন হত্যাকা-ের প্রধান ও পুরস্কার ঘোষিত আসামি মইনুল হাসান শামীমকে (সাংগঠনিক নাম সিফাত, সামির, ইমরান) গ্রেফতার করে পুলিশ। রিমান্ড শুনানিতে বলা হয়, এ আসামি দীপন হত্যাকা-ের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। সে হত্যাকা-ের আগে ঘটনাস্থলে গিয়ে রেকি করেছে। হত্যাকা-ের সময় ঘটনাস্থলে আরো পাঁচজন উপস্থিত ছিল। এক মাস আগে থেকে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেজর জিয়াকে ঘটনার মাস্টার মাইন্ড হিসেবে বলেছে আসামি শামীম। তাই অন্য আসামিদের অবস্থান শনাক্ত ও তাদের গ্রেফতার করতে এ আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
এর আগে ৩১ নভেম্বর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের নিজ অফিসে দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

২০১০ সালে গ্রেফতারের পরও ছাড়া পায়
ছাতক উপজেলা সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জের ছাতকের পুরস্কার ষোষিত শীর্ষ খুনী মঈনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাতকে টঙ্গী থেকে র‌্যাব গতকাল গ্রেফতার করেছে। ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল ছাতকের গোবিগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। তার বাড়ি ছাতকের কালারুকা ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে। সে মৃত আব্দুল কুদ্দুছের পুত্র। তার পিতা ও চাচা আওয়ামী ঘরানার থাকায় লিফলেটসহ হাতেনাতে গ্রেফতারের পরও সে জেল থেকে সহজেই ছাড়া পেয়ে আবারো জঙ্গী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ে। ঢাকা ডিএমপি পুলিশ ১৯মে সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে সিফাতসহ ছয়জনের ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়ে পুলিশ তাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে। ঢাকা ‹ডিএমপি নিউজ পোর্টালে›ও তাদের ছবিসহ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
সরকারের ১৮লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষিত দেশের ছয়জন শীর্ষ জঙ্গির অন্যতম এবিটির সামরিক শাখার অন্যতম হচ্ছে সিফাত। ঢাকা কলাবাগানের জোড়া খুন, লেখক অভিজিৎ রায়, ফয়সল আরেফিন দীপন, নীলাদ্রি চ্যাটার্জি নিলয়, জবি ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদসহ আট লেখক-প্রকাশক ও ব্লগার হত্যায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এদের মধ্যে ধৃত সিফাত অন্যতম খুনি হিসেবে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় ছিল। পুলিশ বলছে, শনাক্ত হওয়া ছয়জন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সক্রিয় সদস্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন