বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঈদের আগেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট : যাত্রীদের ভোগান্তি

প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা
ঈদের আগেই শুরু হয়েছে যানজটের ভোগান্তি। গতকাল বৃহস্পতিকবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা ও গোমতি সেতুকে কেন্দ্র সৃষ্ট কয়েক কিলোমিটার যানজটে হাজার হাজার যাত্রীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা এ যানজটের জন্য পুলিশের দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশ সেতুতে ওঠার আগে যানবাহনগুলোকে শৃঙ্খলা ও সারিবদ্ধ করে ওঠার সুযোগ করে দিলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতো না। তবে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল মালেক বলেছেন,  মহাসড়রে ৮ লেন ও ৪ লেন দিয়ে আসা হাজার হাজার যানবাহন যখন সেতুতে উঠতে যায় তখন এগুলোর গতি কম থাকে। সে কারণে যানজটের সৃষ্টি হতেই পারে। তিনি জানান, সকালে যানবাহনের চাপে যানজট ছিল দুপুরে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর বিকালে সেতুর উপর গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। সেই গাড়িকে রেকার দিয়ে টেনে সরাতে গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগি কয়েকজন যাত্রী জানান, গতকাল সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা ও গোমতি সেতুর দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটে হাজার হাজার গাড়ি আটকা পড়ে। ঘন্টার পর ঘন্টা যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেট কার ও মালবাহী ট্রাক আটকে থাকে মহাসড়কে। এসময় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা থেকে ঢাকামুখি এবং ঢাকা থেকে ওই সব জেলামুখি বাসের যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রচ- গরমের মধ্যে বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদের ভোগান্তি সীমা ছাড়িয়ে যায়। অনেকে গাড়ি থেকে নেমে একটু ছায়ার খোঁজে ছুটোছুটি করতে থাকেন। ফেনী থেকে ঢাকামুখি একজন বাসের যাত্রী বলেন, চার লেনের মহাসড়কে কেন এরক যানজট হবে তা বুঝতে পারলাম না। আগে না হয় লেন কম ছিল। সরকার এতো টাকা খরচ করে লেন তৈরী করে আমাদের কী লাভ হলো। আরেক যাত্রী বলেন, কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসতে সর্বাধিক আড়াই ঘন্টা লাগার কথা। সেখানে মেঘনা সেতুর ওপারে যানজটে গাড়ি দুই ঘন্টার বেশি আটকে থাকলো। সময় লেগে গেল ডাবলেরও বেশি। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, ৮ লেন বা ৪ লেন থেকে গাড়িগুলো যখন সেতুতে ওঠে তখন সবাই আগে উঠতে চায়। বিশেষ করে প্রাইভেট কারগুলো ওভারটেক করে সামনে চলে যায়। এক পর্যায়ে সেতুর মুখে সব গাড়ি এক সাথে আটকে যায়। গাড়িগুলোকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা পুলিশের দায়িত্ব। পুলিশ ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না। তিনি বলেন, মহাসড়কে গেলে দেখতে পাবেন মাত্র দুজন পুলিশ সেতুর মুখে দাঁড়িয়ে থাকে। ওই দুই পুলিশও যদি গাড়িগুলোকে সারিবদ্ধ করে সেতুতে ওঠার নির্দেশ দিতো তাহলেও চলতো। কিন্তু তারা তা করে না। বরং তাদের দৃষ্টি থাকে মালবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও পিকাপ ভ্যানের দিকে। নোয়াখালী রুটের একটি বাসের চালক সায়েম খন্দকার বলেন, বিশৃঙ্খলার কারণেই সেতুর মুখে যানজটের কবলে পড়ছে হাজার হাজার গাড়ি। পুলিশ চাইলে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সে জন্য সেতুতে ওঠার আগে থেকেই গাড়িগুলোকে সারিবদ্ধ করে সেতুতে ওঠার সুযোগ করে দিতে হবে। কোনো গাড়ি যেনো এক্ষেত্রে ওভারটেক করে সামনে যেতে না পারে সেজন্য পুলিশকে কঠোর হতে হবে। হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল মালেক বলেন, মহাসড়কে যানবাহনগুলো বেশি গতিতে চলাচল করে। সেই যানবাহনগুলো সেতুতে ওঠার সময় গতি কমে যায়। দেখা যায়, ৭০/৮০ কিলোমিটার গতিবেগের গাড়ি সেতুতে ওঠার সময় ৫ কিলোমিটার বেগে ওঠে। এতে করে পেছনের গাড়িগুলো আটকে থাকবে- এটাই স্বাভাবিক। সেতু দুটো মহাসড়কের তুলনায় অনেক সরু উল্লেখ করে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, আগামীতে আরেকটি সেতু নির্মিত হলে এই সমস্যা থাকবে না। পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে পরিবহন মালিক সমিতির নেতার অভিযোগ খ-ন করে তিনি বলেন, সেতুর উপর গাড়ি বিকল হলে পুলিশ তো আর মাথায় করে সেটা সরাতে পারবে না। এজন্য অবশ্যই সময় দিতে হবে। সে কারণে যানজট হতেই পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন