শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী বিশ্ব

কাশ্মীরে লাগাতার বিক্ষোভে ভেঙে পড়ছে অর্থনীতি

সহিংস আন্দোলন আর টানা কারফিউয়ের প্রভাবে ৪৯ দিনে ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি রুপি

প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিক্ষোভ দমনে ছররা গুলির বিকল্প হিসাবে নেয়া হচ্ছে মরিচের গুঁড়া ব্যবহারের পরিকল্পনা

নিরাপত্তা বাহিনীর বেপরোয়া ছররা গুলির আঘাতে চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়েছে অসংখ্য মানুষ

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরে হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির হত্যার জের ধরে একটানা অশান্তির কারণে উপত্যকা অঞ্চলের অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। কাশ্মীর ট্রেডার্স অ্যান্ড মেনুফ্যাকচারার্স ফেডারেশনের হিসেবে, গত ৪৯ দিনে কাশ্মীরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৬,৪০০ কোটি রুপি ছাড়িয়েছে। একটানা বিক্ষোভ আন্দোলন এবং তার জের ধরে একনাগাড়ে চলা কারফিউয়ের প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়। পর্যটক আসা বন্ধ হওয়ায়, স্বাভাবিক কারণেই পর্যটন ব্যবসা লাটে উঠেছে।
গত ৮ জুলাই কাশ্মীরের অনন্তনাগে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় হিজবুল মুজাহিদিনের কমান্ডার বুরহান ওয়ানি। তার জের ধরেই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ লেগে রয়েছে। ৪৯ দিনে নিহত হয়েছে ৬৬ জন। আহত হাজারেরও বেশি। বতমান সময়ের হতাহতের সংখ্যা যোগ করা হলে এই সংখ্যা আরো বাড়বে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে একটানা বন্ধ চলায় দোকানপাঠ খোলা হচ্ছে না কাশ্মীরে। বিভিন্ন অফিসও বন্ধ। বন্ধ পেট্রোলপাম্পও। পর্যটকদের জন্য হোটেল তো আগেই বন্ধ হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে পর্যটননির্ভর এই রাজ্যের অর্থনীতিতে।
কাশ্মীর ট্রেডার্স অ্যান্ড মেনুফ্যাকচারার্স ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াসিন খান জানান, প্রতিদিন ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ কোটি। গত ৪৯ দিনে ক্ষতি হয়েছে ৬,৪০০ কোটিরও বেশি। বিগত ছয় মাস আগের ব্যবসার নিরিখেই এই হিসাব দেয়া হয়েছে। গত দেড় মাসে সরকারের ৩০০ কোটি রুপির বেশি রেভেনিউও নষ্ট হয়েছে। কারণ বিক্রয় কর, আয়কর আদায় পুরোপুরি বন্ধ।
অপর এক খবরে বলা হয়, ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে স্বাধীনতাকামী বিক্ষোভকারীদের ওপর ছররা গুলির ব্যবহার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠায় বিকল্প চিন্তাভাবনা শুরু করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। কারণ কাশ্মীরে ছররা গুলিতে বহু বিক্ষোভকারী চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খবরে বলা হয়, এরপর থেকে ভারত সরকার ছররা গুলির বিকল্প হিসেবে মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করা হতে পারে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ছররা গুলির বদলে চিলিভিত্তিক পাভা শেল (মরিচের গুঁড়া) ব্যবহারের পক্ষেই মত দিয়েছে বিশেষজ্ঞ প্যানেল। অবশ্য সেই সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই কাশ্মীরের অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় সেনা ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর যৌথ অভিযানে স্বাধীনতাকামী হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হওয়ার পর কাশ্মীরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ দমনে ব্যবহার করা হয় ছররা গুলি। আর এর ফলে ইতোমধ্যে অনেকেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। খবরে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে মতামত দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিশেষজ্ঞ প্যানেল নিয়োগ করেছে, তারা নবনির্মিত পাভা শেলস ব্যবহারের পক্ষে। ছররার বদলে এতে ব্যবহার করা হবে মরিচের গুঁড়া। এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডয়া, ইকোনোমিক টাইমস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন