স্টাফ রিপোর্টার : তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষে আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামপাল বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন জানার পর থেকে মানুষের মনে একটু আশার সঞ্চার হয়েছিলো যে হয়তো প্রধানমন্ত্রী স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য এবং দেশজোড়া জনমত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন এবং রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে সুন্দরবনকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার পথ গ্রহণ করবেন। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোম্পানির বিজ্ঞাপনী প্রচারণা দ্বারা প্রভাবিত, সেকারণে তাঁর বক্তব্যে অনেক ভুল তথ্য, অতিরঞ্জন আছে। এমনকি আমরা গত ২৮ জুলাই ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি’-তে যেসব প্রচারণা খ-ন করেছি, প্রধানমন্ত্রী আবারও সেগুলোই উচ্চারণ করেছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন দেশের উদাহরণ, বড়পুকুরিয়ার ক্ষতি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ তুলেছেন, ‘এতোসব আন্দোলনের খরচ কে যোগান দেয়?’ প্রধানমন্ত্রীর অবগতির জন্য জানাচ্ছি, এই আন্দোলন জনগণের গায়ে-গতরে গড়ে তোলা আন্দোলন। তিনি হয়তো ভুলে গেছেন ভাষা আন্দোলনে মানুষ পয়সা দিয়ে আনতে হয়নি, ৬০ দশকের আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধে মানুষ জীবন বাজি রেখে গেছে। পয়সা দিয়ে দালাল আসে যেমন রামপালের প্রকল্পের পক্ষে প্রচারকরা আছে। এটা খুবই হতাশাজনক যে, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনী করেছেন। সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে তরুণেরাই প্রধান শক্তি। তারা আজকের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে জমায়েত হয়েছে। তাঁদের প্রেরণা, প্রাণের টান বোঝার ক্ষমতা থাকলে সুন্দরবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার উদ্যোগ দেখা যেতো না।
একদিকে বিএনপি নেত্রী সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে সুন্দরবন আন্দোলন বিষয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন অন্যদিকে তার বক্তব্যের সুযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনকে কালি মাখানোর চেষ্টা করেছেন। আমরা পরিষ্কার করে বলি, সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন বৈজ্ঞানিক তথ্য বিশ্লেষণের ওপর ভর করে এবং সামাজিক দায়বোধ থেকে স্বাধীন ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হিসেবে গত কয়েক বছরে বিকশিত হয়েছে। আমরা এখনও আশা করি, এই আন্দোলনকে কলঙ্কিত না করে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতি দায়বোধ থেকে জনগণের স্বার্থ বুঝতে চেষ্টা করে মানুষ ও প্রকৃতি বিধ্বংসী প্রকল্প বাতিল করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় কমিটির বিস্তারিত বক্তব্য আগামী ২৯ আগস্ট এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন