প্রাণঘাতী করোনা মহামারিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের অধীনে সারাদেশের ১ হাজার ১০টি দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষিকারা বিগত ১৩ মাস যাবত বেতন ভাতা পাচ্ছে না। এসব শিক্ষকরা পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। আগামী মাহে রমজানের আগেই দারুল আরকাম মাদরাসার এসব দুর্দশাগ্রস্ত শিক্ষকদের নতুন প্রকল্প অনুমোদন এবং বেতন-ভাতা চালুর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মুফতি জয়নুল আবেদীন।
আজ শুক্রবার সমিতির সভাপতি ইনকিলাবকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায়ে ২০১৮ সালে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এসব মাদরাসার কার্যক্রম চালু করা না হলে সারাদেশে দু’লক্ষাধিক ছাত্র ছাত্রীরা দ্বীনি শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। তিনি উল্লেখিত মাদরাসার শিক্ষকদের বকেয়া বেতন গত বছরের দু’টি ঈদের বোনাস পরিশোধের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তিনি বলেন, দারুল আরকাম মাদরাসার ২ হাজার ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মহীন হয়ে অনাহার অনিদ্রায় চরম হতাশায় ভুগছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দারুল আরকাম মাদরাসার প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় ইফা থেকে নতুন বছরের বই-পুস্তক পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হয়নি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প থেকে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসাকে বাদ দেয়ায় শিক্ষকদের বেতন ভাতা ও মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ইফা বোর্ড অব গভর্নরস এর সাবেক গভর্নর আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী অবিলম্বে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রকল্প অনুমোদনের জোর দাবি জানিয়ে বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ইসলামের খেদমতে বঙ্গবন্ধুর অবদান প্রসার এবং সারাদেশে কোমলমতি শিশুদেও ইসলামী নৈতিক ও কোরআনী শিক্ষা দানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে দারুল আরকাম মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। গত ২ জুন মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প থেকে দারুল আরকাম মাদরাসাকে বাদ দেয়ায় শিক্ষাক শিক্ষিকারা চরম হতাশায় ভুগছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ ঘোষণা দিয়েছিলেন নতুন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব নেয়ার পর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দারুল আরকাম মাদরাসা চালুর বিষয়টি সুরাহা করা হবে।
মুফতি জয়নুল আবেদীন বলেন, করোনা মহামারিতে দারুল আরকাম মাদরাসার এসব অসহায় শিক্ষকরা কারো কাছে হাত পাততেও পারছেন না। ধার দেনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রি কিনতে হিমশিম খাচ্ছে ইফার শিক্ষকরা। অনাহারি সন্তান ও বৃদ্ধ মা বাবার আহার যোগাতে হিমসিম খাচ্ছেন মাদরাসার শিক্ষকরা । গত ৬ জুলাই এসব শিক্ষকদের বেতন ভাতার দাবিতে তেজগাঁওস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিখিত আবেদন পেশ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, দারুল আরকাম মাদরাসার নতুন প্রকল্প অনুমোদনের লক্ষ্যে আমরা ধর্ম প্রতিমন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের সমর্থন পেয়েছি। এদিকে, দারুল আরকার মাদরাসার গুটি কয়েক অতিলোভী শিক্ষক নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে শিক্ষক কল্যাণ সমিতিকে পাশ কাটিয়ে ইফার কার্যালয়ের সামনে দুই এক দিনের মধ্যে কর্মসূচি দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন